ফারুক আহাম্মেদ মোল্লা, ব্রাসেলস, বেলজিয়াম: ৩ নভেম্বর ২০১৮ শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা রয়েল কাশ্মীর রেস্টুরেন্টে” জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। সংগঠনের সভাপতি সহিদুল হকের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর চৌধুরী রতনের পরিচালনায় উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন বেলজিয়াম আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
দেশের ইতিহাসে যে কয়টি দিন চিরকাল কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে, যে কয়েকটি ঘটনা বাংলাদেশকে কাংখিত অর্জনের পথে বাধা তৈরি করেছে, তার মধ্যে অন্যতমটি হল ১৯৭৫ এর ৩রা নভেম্বরের এই দিনটি।
সভায় বক্তব্য রাখেন বেলজিয়াম আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি হুমায়ুন মাকসুদ (হিমু), প্রচার সম্পাদক আখতারুজ্জামান (আক্তার), দপ্তর সম্পাদক রাইসুল ইসলাম (রাসেল), শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মনির হোসেন (হিরু), যুব লীগ সভাপতি খালেদ মিনহাজ, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান (রতন) ও ছাত্রলীগ বেলজিয়াম শাখার সদস্য শাহাদাৎ হোসেন সহ অনেকে।
বক্তারা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যা করা হয় বাঙ্গালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির জনক ও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতে ৪৩ বছর আগে ১৯৭৫ এর ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ থাকা জাতির চার মহান সন্তান, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম পরিচালক, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, জাতীয় চার নেতা বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইছ এম কামরুজ্জামানকে ব্যয়নেট দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় এমন জঘন্য, নৃশংস ও বর্বরোচিত হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তাঁর ঘনিষ্ঠ এই চার সহকর্মীকে গ্রেফতার করে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে পাঠানো হয়েছিল। পরবর্তী অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ক্যু-পাল্টা ক্যুর রক্তাক্ত অধ্যায়ে মানবতার শত্রু ও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ওই একই পরাজিত শক্তির দোসর খুনি জিয়া ও বিপথগামী কিছু সেনাসদস্য কারাগারে ঢুকে চার নেতাকে হত্যা করে। সেই থেকে প্রতিবছরের মতো এ দিনটি জেলহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
সমাপনী বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি সহিদ বলেন, ৭১, ৭৫, ২০০৪ এর ২১ আগস্টের খুনী চক্ররা সবাই এক। তাদের লক্ষ ও উদ্দেশ্য একই সূত্রে গাঁথা। তাদের মূল উদ্দেশ্য বাঙ্গালি জাতিকে পিছিয়ে দেয়া, আবারো পাকিস্তানী ভাবধারায় ফিরিয়ে নেয়, এই খুনি চক্রটি ও তাদের দোসররা এখনো সক্রিয়।
তাই আমাদের একটু বেশী সতর্ক হতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিতে হলে, আগামী নির্বাচনে দেশের স্বার্থে আওয়ামী লীগকে বিপুল ভোটে জয়ী করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের বিকল্প নেই। তাই আমাদের সবাইকে সে লক্ষে দল মত নির্বিশেষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে।