মোস্তফা ইমরান রাজু, মালয়েশিয়া প্রতিনিধি: বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি’র অভিযোগ এনে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভাননে’র বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ‘ইখলাস’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। ক্ষুদ্র ও মধ্যম উদ্যোক্তাদের জোট ‘ইখলাস’র প্রতিনিধিরা দাবি করেছেন কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মানবসম্পদ মন্ত্রীর কর্মকান্ড সন্দেহজনক এবং ক্ষমতার অপব্যাহার করে তিনি দুর্নীতি করছেন।
মঙ্গলবার কুয়ালালামপুরের ডাং ওয়াঙ্গি থানায় মামলা দায়েরের পর সংস্থাটি’র সভাপতি মো: রিজোয়ান আব্দুল্লাহ বলেন, গেলো ১৭ জুন ২৫ সিন্ডিকেট নিয়ে বাংলাদেশের এক মন্ত্রীর বরাত দিয়ে মালয়মেইল অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের পর বিষয়টি তাদের দৃষ্টিগোচর হয়। ঐ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, ২৫ সিন্ডিকেটের ব্যাপারে বাংলাদেশের মতামত নিয়ে মানবসম্পদমন্ত্রী সারাভানন যে দাবি করেছেন তা সঠিক নয়। এসময় মন্ত্রী সারাভানন সকাল সন্ধায় তার মত পরিবর্তন করছেন বলেও অভিযোগ করেন, রিজোয়ান।
বাংলাদেশের মন্ত্রী যদি দাবি করে থাকেন যে, তারা এ ২৫ সিন্ডিকেট করেননি তাহলে কারা সিন্ডিকেট করেছেন’ এমন প্রশ্নও রাখেন ‘ইখলাস’ সভাপতি। এ বিষয়ে সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন আর এ কারনেই পুলিশ রিপোর্ট করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এখনও পর্যন্ত তিনটি থানায় এ নিয়ে রিপোর্ট করা হয়েছে প্রয়োজনে আরো কয়েকটি থানায় রিপোর্ট করা হবে বলেও জানান এ এনজিও প্রধান।
‘ইখলাস’ নামে ঐ সংস্থার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের এ বিষয়টি নিয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করা হয়। সংস্থাটির সভাপতি বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিরব থাকলে অনেকে ভাববে এ দুর্নীতি’র সঙ্গে তিনিও জড়িত রয়েছেন।
উল্লেখ্য প্রায় তিন বছর বন্ধ থাকার পর পুন:রায় বাংলাদেশ থেকে কর্মী আনতে চুক্তিবদ্ধ হয় মালয়েশিয়া। ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও কোন প্রক্রিয়ায় কর্মী আনা হবে এবং কোন কোন রিক্রুটিং এজেন্সি এ প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে এ নিয়ে বাধে বিপত্তি। দু’দেশের সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকেও কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে সিন্ডিকেটের পক্ষে বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেয়া হয়। ২ জুন ২০২২ মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান বাংলাদেশ সফর শেষে দাবি করেন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জনশক্তি পাঠাতে সম্মতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এরপরই বাংলাদেশের তরফ থেকে স্পষ্ট জানানো হয় সিন্ডিকেট প্রশ্নে মালয়েশিয়ার মন্ত্রীর অভিযোগ সঠিক নয়। এমনকি স্বাক্ষরিত চুক্তিতেও এ ধরনের কোন শর্ত যুক্ত নেই বলেও প্রবাসীকল্যানমন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে মন্তব্য করা হয়।
কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সিন্ডিকেট জটিলতায় নিজ দল ও বিরোধিদের তোপের মুখে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানন। এ অবস্থায় আবারো স্থবির হওয়ার শঙ্কায় দু’দেশের মধ্যকার স্বাক্ষরিত শ্রম চুক্তি।