রাশেদ কাদের, আম্মান, জর্ডান : জর্ডানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্ট ২০২০ পালন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে দূতাবাস বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজন করে। এই উপলক্ষ্যে দূতাবাসে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় ১৫ আগস্ট ও আমার ভাবনা’ শীর্ষক এক উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোররা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তাদের ভাবনা এবং তাঁর অকাল প্রয়াণে তাদের অনুভূতির কথা ব্যক্ত করে। তারা এই আয়োজনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেয়ার জন্য দূতাবাসকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু-কিশোরদের সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করা হয়।

জর্ডানে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান ১৫ আগস্ট সকালে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান শুরু করেন। এরপর ১৫ আগস্টে নিহত শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় দূতাবাসের কর্মকর্তাগণ ছাড়াও জর্ডান প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশ নেন। উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে জনাব জালাল উদ্দিন আহমেদ, জনাব ড. মোয়াজ্জেম হোসেন ও জনাব এহসান উল হক হেলাল প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, ১৫ আগস্ট আমাদের জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। এমন ঘটনা কেবল দেশের ইতিহাসে নয় বরং পৃথিবীর ইতিহাসেও বিরল। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সবাইকে হত্যার মাধ্যমে খুনিরা যে নীল নকশা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল, বাংলাদেশের মানুষ কখনোই তা হতে দেয়নি। তাই স্বাধীনতার প্রায় অর্ধ শতাব্দী পরও বাংলার ঘরে ঘরে আজ চিরঞ্জীব শেখ মুজিবুর রহমান। বক্তারা বঙ্গবন্ধুর সকল পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তির মাধ্যমে আদালতের রায় কার্যকরের আহবান জানান।

মান্যবর রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা ও মহান স্বাধীনতার রূপকার। প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকারের আন্দোলনে তিনি ছিলেন বাঙালির আশা আকাঙ্খার প্রতীক। বঙ্গবন্ধু হত্যার ঘটনা বাংলাদেশের এক লজ্জাস্কর ইতিহাস, আমাদের কলঙ্কের ইতিহাস। আন্তর্জাতিক আইনের চোখেও এই ঘটনা অবৈধ, অগণতান্ত্রিক এবং বেআইনি। কিন্তু ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা করলেও তাঁর স্বপ্নকে নষ্ট করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে তাঁরই কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে তাই দেশ আজ এগিয়ে চলছে উন্নয়নের মহাসড়কে। তাঁরই হাত ধরে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে আজ এক অপার বিস্ময়। মান্যবর রাষ্ট্রদূত উপস্থিত শিশু-কিশোরদের বঙ্গবন্ধুকে জানার ও তাঁর বহুমাত্রিক জীবনের নানা দিক সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করার জন্য অনুপ্রাণিত করেন। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা সকলের কর্তব্য। তিনি বঙ্গবন্ধুকে হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে ভিশন ২০৪০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিয়োজিত হতে আহবান জানান।