প্রবাস মেলা ডেস্ক: বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষ কর্মী নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। এছাড়াও দেশটিতে বিনিয়োগে আগ্রহী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্যও দরজা খুলে দেওয়া হবে। সৌদি আরবে অবকাঠামো, ভবন নির্মাণ, কৃষি, বস্ত্র, মৎস্য শিকার এবং খামারের মতো অসংখ্য বিনিয়োগ খাত রয়েছে। এসবের যে কোনো খাত বাংলাদেশিদের বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত রাখার কথা জানানো হয়েছে। বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নেতাদের সৌদি সফরকে সামনে রেখে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) ঢাকায় নিযুক্ত রিয়াদের রাষ্ট্রদূত এসা আল-দুহাইলান এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান। আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত এসা আল-দুহাইলান জানান, সৌদি আরবে বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বড় প্রবাসী শ্রমিক সম্প্রদায়। দেশটিতে বর্তমানে ২৮ লাখ বাংলাদেশি অবস্থান করছেন এবং বাংলাদেশি শ্রমিকেরা দক্ষ ও পরিশ্রমী হিসেবে সুপরিচিত বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, সৌদি আরবে আপনি যেখানেই যাবেন, সেখানেই আপনি একজন বাংলাদেশিকে দেখতে পাবেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তারা তাদের আয় এবং সমৃদ্ধির কথা জানিয়ে সৌদি আরব ও সৌদি জনগণকে ধন্যবাদ জানান। তাদের অনেকেই সৌদি আরবের প্রতি অনুগত।
তিনি আরও বলেন, তাদের প্রচেষ্টা সম্পর্কে সৌদি আরবের সরকার এবং জনগণও ভালো করে জানে। তারা সৌদি আরবের উন্নয়নে অংশ নিচ্ছে। আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিওম’ শহর বা লোহিত সাগরের উপকূলের উন্নয়নের মতো বেশ কিছু মেগা প্রকল্পের জন্য বর্তমানে সৌদি আরবে বিপুল দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন। তাই দেশটির কর্তৃপক্ষ বিদেশিদের কর্মীদের আরও বেশি বেশি সুযোগ দিচ্ছে। সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আছে, আমাদের নতুন পরিকাঠামো আছে, আমাদের মেগাপ্রজেক্ট আছে। এই মেগাপ্রকল্পের জন্য আমাদের দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন। আমরা বিভিন্ন সেক্টরে সৌদি আরবে কাজ করতে যাওয়ার জন্য সব ধরণের পেশাদারদের স্বাগত জানাই। তিনি আরও বলেন, আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশিদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের জন্য অনুরোধ করছি এবং এতে দুই দেশের উপকার হবে। আমরা দক্ষ কর্মী পাব এবং বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য বাংলাদেশও বিনিয়োগ করবে। যদিও সৌদি আরব ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহের অন্যতম প্রধান উৎস। দেশটিতে পেশাদারদের বেতন আধা-দক্ষ কর্মীদের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বেশি।
সৌদি আরব ও বাংলাদেশ চলতি বছরের শুরুতে কর্মী নিয়োগ এবং দক্ষতা যাচাইকরণ প্রোগ্রাম চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল, তখন আল-দুহাইলান পূর্বাভাস দিয়েছিলেন যে—এই প্রকল্পের অধীনে নিযুক্ত ব্যক্তিরা কমপক্ষে দ্বিগুণ উপার্জন করবেন। রাষ্ট্রদূত আল-দুহাইলান জানান, বাংলাদেশি শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের প্রতিনিধি দলটি চলতি মাস কিংবা আগস্টের মধ্যে সৌদি আরব সফর করবেন। সৌদি আরবে চেম্বার অব কমার্স নেতাদের সঙ্গে দেখা করা ছাড়াও তারা সেখানকার বাজারের সুযোগগুলো পর্যবেক্ষণ করবেন। তিনি বলেন, সৌদি আরবে বিশাল সুযোগ রয়েছে। যে কোনো ক্ষেত্রে সেখানে বাংলাদেশি যে কেউ বিনিয়োগ করতে পারবেন। সৌদি আরবের অবকাঠামো, ভবন নির্মাণ, কৃষি, বস্ত্র, মৎস্য শিকার এবং খামারের মতো অসংখ্য বিনিয়োগ খাত রয়েছে।
এছাড়া, প্লাস্টিক, ফার্নিচার শিল্পেও বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে বলে রাষ্ট্রদূত আল-দুহাইলান জানান। এজন্য তিনি ব্যবসায়ীদের বাজার ঘুরে দেখার আহ্বান জানান।