আখি সীমা কাওসার, রোম, ইতালি প্রতিনিধিঃ লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু ও জনশক্তি খাতকে জরুরী সেবার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে দুই রিক্রুটিং এজেন্সি সংগঠন। জানাগেছে ১২ এপ্রিল, ২০২১ রিক্রুটিং ঐক্য পরিষদ ও রিক্রুটিং এজেন্সি ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-রাওব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে লকডাউনে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহবান জানায়। যেহেতু অনেক ইউরোপ, আমেরিকা কানাডা, লন্ডনসহ আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রীরা টিকিট কেটে বাংলাদেশে এসে নানা কারণে আটকে পড়েছে , বিশেষ করে প্রধান কারণ হলো, যাওয়ার ৭২ ঘন্টা আগে যে করোনা টেস্ট করতে হয়, সেখানে অনেকেই পজিটিভ পাচ্ছে , শরীরে কোন প্রকার লক্ষণ না থাকলেও তাদের হাতে পজেটিভ রিপোর্ট জমা হচ্ছে । এতে অনেক প্রবাসী হতাশাগ্রস্থ হয়ে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে ।
বিশেষ করে নারী যাত্রীরা, কারণ তাদের স্বামী সন্তান বিদেশে অবস্থান করছে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের অনেকেই ছেলেমেয়ে, স্বামী রেখে দেশে আসছে, ফ্যামিলি প্রয়োজনে। আবার অনেকে স্বামী, স্ত্রী সন্তানদের রেখে আসছে ফ্যামিলি প্রয়োজনে । মানবিক দিক বিবেচনা করে যারা অলরেডি টিকিট কেটে দেশে আছে এবং তাদের প্লেনের সিট আছে, তারা যেন তাদের ওই টিকিটে গন্তব্য স্থানে ফিরে যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার জন্যই জোর দাবি জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এর যাত্রীরা, ও রিক্রুটিং এজেন্সি গুলো । কাজেই সেই টিকিটের অনুপাতে তারা যেন তাদের ফ্যামিলির কাছে তারিখ অনুযায়ী ফিরে যেতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে । না হলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের দেশে আটকে পড়া যাত্রীগণ অনেক বড় রকমের ক্ষতির সম্মুখীন হবে ।
রিক্রুটিং এজেন্সি মনে করে, এই লকডাউনে ঘোষিত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী, যা এই সেক্টরকে ধ্বংস করবে, সাথে সাথে বড় রকমের বিপর্যয়ের মুখে পড়বে লাখ লাখ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এর যাত্রী ।এক্ষেত্রে লকডাউনে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু রাখা ও জনশক্তি খাতকে জরুরী সেবায় অন্তর্ভুক্ত করার জোর দাবি জানানো হয়। বিদেশে কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদেশগামীদের জন্য কিছু পরামর্শের কথা চিঠিতে তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বিদেশগামী যাত্রীরা একত্রিত হয়ে বিমানবন্দরে আসবে না, সেক্ষেত্রে তারা ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বিমানবন্দরে এসে পাসপোর্ট, টিকিট ও স্মার্ট কার্ড দেখিয়ে বিদেশ গমন করবে তাই তাদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ঝুঁকি নেই। ফলে তাদের এই লকডাউনের আওতামুক্ত রাখা যায়। এছাড়া ফ্লাইট বন্ধের বিষয়টি যখন কর্মী গ্রহণকারী দেশগুলো জানবে তখন তাঁরা ঝুঁকির কথা চিন্তা করে কর্মী গ্রহণ বন্ধ করে দিতে পারে। এমনকি পরবর্তী সময়ে দেশ থেকে ফ্লাইট চালু হলেও সংশ্লিষ্ট দেশগুলো কর্মী নিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে। তাই কর্মী প্রেরণকারী এই এজেন্সিগুলো চিঠিতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর রাখার দাবি জানিয়েছেন। এদিকে রিক্রুটিং এজেন্সির চিঠি দেওয়ায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ তাদের আশ্বস্ত করেছেন। মন্ত্রী আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু রাখার জন্য তদবির করবেন বলে জানিয়েছেন।