রানা সাত্তার, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: বিজয়া দশমীর আনুষ্ঠানিকতা শেষে চট্টগ্রামের পারকি সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন করা হয়েছে। ২৬ অক্টোবর ২০২০, সোমবার বিকেল ২টা থেকে সমুদ্র সৈকতে শুরু হয় একে একে প্রতিমা বিসর্জন।
তেল-সিঁদুর পরিয়ে, পান, মিষ্টি মুখে দিয়ে দেবী দূর্গাকে বিদায় জানাতে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে ভিড় করেছেন ভক্ত ও অনুরাগীরা। নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষের অংশগ্রহণে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান হাজারো মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে পারকি সৈকত।
হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, এ বছর দেবী দূর্গা মর্ত্যে এসেছেন দোলায় চড়ে। কৈলাসে ফিরে যাচ্ছেন গজে (হাতি) চেপে। ‘দোলায়াং-মড়কং-ভবেৎ।’ অর্থাৎ মা দোলায় এলে দেখা দেয় মড়ক। আবার ‘গজে চ জলদা দেবী শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা’৷ অর্থাৎ মা গজে গমন করলে পৃথিবীতে জলের সমতা বজায় থাকে এবং শস্য ফলন ভালো হয় ৷ সুখ সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ থাকে মর্ত্যভূমি৷

দুপুর থেকেই চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ থেকে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য ট্রাকবাহী প্রতিমা নিয়ে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে পূজারী ও ভক্তরা জড়ো হতে শুরু করেন সৈকতে। এরপর শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জনের পালা। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে এবার শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়নি। কিন্তু শঙ্খ উলুধ্বনির পাশাপাশি বাদ্যের ঘণ্টা বাজিয়ে ‘জয়, দূর্গা মায়ের জয়’ বলে একের পর এক প্রতিমা ভাসিয়ে দেওয়া হয় সাগরে। এবার উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ১০৭টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এসময়ে উপস্থিতি স্থানীয় বারশত ইউপি চেয়ারম্যান এম.এ কাইয়ুম শাহ্, উপ-পুলিশ পরিদর্শক সিটিএসবি মোহাম্মদ মোস্তাক আহমদ, বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুর রহিম।
কর্ণফুলী থানার পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী রামচন্দ্র দেব বলেন, এবার করোনা ভাইরাসের কারণে প্রতিমা বিসর্জন ও পূজার সময় স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং ছোট পরিসরে অনুষ্ঠান দিয়েই সম্পূন্ন করা হয় দেবীদূর্গার বিসর্জন। দেবী দূর্গাকে বিদায় শান্তিপূর্ণ প্রতিমা বিসর্জন উৎসব পালিত হয়েছে। বিসর্জনের মাধ্যমে পিতৃগৃহ ছেড়ে দেবী মা ফিরে গেলেন কৈলাসধামে তাঁর স্বামীগৃহে।

স্থানীয় বারশত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ কাইয়ূম শাহ্ বলেন, নিরাপত্তা ও আনন্দ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জন শেষ হয়েছে। সৈকতে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে কঠোর নজরদারীতে ছিলো প্রশাসন। দায়িত্ব কাধে নিয়ে আমার ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ সদস্যরাও ছিলেন সজাগ।
কর্ণফুলী জোনের পুলিশ কমিশার (এসি) মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজায় যেন কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য প্রশাসন সর্বদা সজাগ ছিলো এবং নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিমা বিসর্জন শেষ হয়েছে।