প্রবাস মেলা ডেস্ক: পাকিস্তানের সক্রিয় কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় জাতিসংঘে ভারতের সব ধরনের পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। এমনটি দাবি করেছে বিশ্ব সংস্থাটিতে নিযুক্ত পাকিস্তানি কূটনৈতিক মিশন। ভারত বড় ধাক্কা খেয়েছে, কারণ পেহেলগাম হামলা নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) বিবৃতিতে শক্ত ভাষা ব্যবহার করা হয়নি। যেমনটি ২০১৯ সালের পুলওয়ামা ঘটনার সময় ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই হামলায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েক ডজন সদস্য নিহত হয়েছিল।
ভারতের অবৈধভাবে দখলকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে (আইআইওজেকে) পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতিতে শুধু ‘সকল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের’ কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তবে বিশেষভাবে ভারতের নাম নেয়া হয়নি। এই বিবৃতির খসড়া প্রস্তাব করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু এটি অনুমোদিত হয়নি। খবর জিও নিউজের।
পেহেলগামে ২২ এপ্রিলের হামলার পর থেকে দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ একে অপরের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক কমিয়ে দিয়েছে। নয়াদিল্লি সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে, যার প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদ ভারতীয় এয়ারলাইনসের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দুঃখজনক এই হামলার নিন্দা জানিয়ে ঘটনার নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তে অংশগ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছেন।
এদিকে, পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সতর্ক করেছেন যে পরিস্থিতি যদি আরও তীব্রতর হয় তাহলে তা ‘সর্বাত্মক যুদ্ধে’ পর্যন্ত গড়াতে পারে। এই উত্তেজনার মাঝে ইরান মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে।
তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সাফল্য হলো, পাকিস্তান শুধু বিতর্কিত কিছু শব্দ জাতিসংঘের বিবৃতিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে তাই নয়, বরং ‘পেহেলগাম’ শব্দ ব্যবহারের পরিবর্তে ‘জম্মু ও কাশ্মীর’ শব্দ অন্তর্ভুক্ত করাতে সমর্থ হয়েছে- যেখানে ভারত চেষ্টা করেছিল যেন কেবল পেহেলগামের উল্লেখ করে জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতের অংশ হিসেবে উপস্থাপন করতে।
ভারত এই ঘটনায় জাতিসংঘে তাৎক্ষণিক নিন্দা প্রকাশ করতেও ব্যর্থ হয়েছে। জাতিসংঘের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা এই অঞ্চলের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে।
এছাড়া, জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা পাকিস্তান ও ভারতকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে না যায়।