নাজমুল ইসলাম মকবুল, বিশ্বনাথ, সিলেট থেকে: পরিবেশ বিপর্যয় রোধে পদক্ষেপ নিতে ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সংগঠন মুক্তিযোদ্ধার প্রজন্ম এর উদ্যোগে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
১৪ অক্টোবর ২০২০, বুধবার বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বর্ণালী পাল এর হাতে এ স্মারকলিপি তুলে দেন নেতৃবৃন্দ। স্মারকলিপি প্রদানের পূর্বে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযোদ্ধার প্রজন্ম সভাপতি সাংবাদিক কবি নাজমুল ইসলাম মকবুল এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো: লিমন মিয়ার পরিচালনায় আয়োজিত সভায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন বিশ্বনাথ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আজিজুর রহমান, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এবং পরিবেশ ও নদী রক্ষা পরিষদের সভাপতি রোটারিয়ান মোসাদ্দিক হোসেন সাজুল, বাহরাইন প্রবাসী সাংবাদিক সালেহ আহমদ সাকী, আলী আফসান দোলাল, মাহবুবুর রহমাান, সেলিম আহমদ, মইনুল ইসলামসহ বিশিষ্টজনরা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বিগত বেশ কয়েক বছর যাবৎ সরকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে লিখিত চুক্তিপত্রের মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় সরকারী রাস্তা লিজ নিয়ে বিভিন্ন সমিতি বা সংস্থা বৃক্ষরোপন করে যাচ্ছে। রোডের উভয় পার্শ্বে বৃক্ষরোপনের জন্য লিখিত চুক্তিপত্রে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ফলজ, বনজ ও ঔষধী গাছ রোপনের জন্য আনুপাতিক একটি হার নির্ধারণ করে দেয়া হয়। কিন্তু সরেজমিন দেখা গেছে এসব নীতিমালা কোন সমিতি বা সংস্থা অতীতেও মানেনি বর্তমানেও মানছেনা। বরং কম সময়ে বেশি লাভের আশায় বনজ গাছই রোপন করা হচ্ছে। এসব বনজ গাছের মধ্যে আবার বেশিরভাগ গাছই বিদেশী জাতের এবং পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিক্ষর। অনেক গাছ এতই বিষাক্ত যে এসব গাছে পাখি পর্যন্ত বসেনা। আবার অনেক বিদেশী জাতের বনজ গাছ খুব বেশি পানি শোষণ করে মাটির উর্বরাশক্তি ও পরিবেশ নষ্ট করছে।
এছাড়া অনেক বিদেশি জাতের বনজ গাছের ডালপালা রোডের পার্শ্ববর্তী ক্ষেতের জমির ফসলও নষ্ট করছে। লিজ গ্রহীতা বিভিন্ন সমিতি বা সংস্থার সদস্যরা সংঘবদ্ধ ও প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে নীরিহ কৃষকেরা বছরের পর বছর ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে আসলেও প্রতিবাদ করতে বা মুখ খুলতে সাহস পায়না। এতে পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বিলুপ্ত হচ্ছে দেশিয় প্রজাতির গাছ গাছালি। এসব বিদেশী বিষাক্ত গাছের প্রভাবে বাড়ছে বিভিন্ন ধরণের রোগ বালাই। পরিবর্তন হচ্ছে আবহাওয়া ও জলবায়ূর। ঋতু পরিবর্তনের সাথে আবহাওয়ার মিল চোখে পড়ছেনা। গত ক’বছরে বজ্রপাত বেড়ে গেছে আশংকাজনকহারে। বজ্রপাত ও আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে প্রাণহানি ঘটছে অগণিত মানুষের। স্মারকলিপিতে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়।