প্রবাস মেলা ডেস্ক: চলতি বছরে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পাওয়া তিন জনের মধ্যে একজন অ্যানি এল’হুলিয়ার। পেশায় তিনি সুইডেনের লুন্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক। নোবেল পুরস্কার জয়ের খবর দেয়ার জন্য তাকে যখন কল দেয়া হয় তখন তিনি ব্যস্ত ছিলেন ক্লাস লেকচারে। একাধিক কল দেয়ার পরেও ক্লাস চলাকালীন কল রিসিভ করেননি তিনি। ক্লাস বিরতিতে আবার কল এলে তিনি রিসিভ করেন। নোবেল কর্তৃপক্ষ থেকে অ্যাডাম স্মিথ নামের এক ব্যক্তি অপর প্রান্ত থেকে কথা বলার জন্য সময় চান। অ্যানি জানান, আমি একটু ব্যস্ত, শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছি।
কল দেয়া সেই ব্যক্তি তার কাছ থেকে দুই থেকে তিন মিনিট সময় দেয়ার অনুরোধ জানালে কথা বলার সম্মতি দেন অধ্যাপক অ্যানি এল’হুলিয়ার। পরে তাকে অভিনন্দন জানিয়ে নোবেল পুরষ্কার জয়ের সংবাদ দেন কলদাতা অ্যাডাম স্মিথ। প্রতিউত্তরে অ্যানি এল’হুলিয়ার তাকে ধন্যবাদ জানান।
ক্লাস লেকচারে ব্যস্ত থাকার কথা শুনে কলদাতা জানতে চান তিনি এই সুখবরটি তার শিক্ষার্থীদের জানাবেন কি না? উত্তরে তিনি বলেন, তাদেরকে অবশ্যই জানাবো। তারা জানলে আশা করি অনেক খুশি হবে। এটা অবশ্যই তাদের জন্য অনেক মজাদার বিষয় হবে। তবে আমাকে অবশ্যই আমার ক্লাসের লেকচারে ফিরে যেতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে নোবেল প্রাইজ কর্তৃপক্ষ। নোবেল প্রাইজ নামক ভেরিফাইড পেজে অ্যানি এল’হুলিয়ারের ফোনে কথা বলার একটি ছবি পোস্ট দিয়ে বলা হয়েছে, একজন নিবেদিত প্রাণ শিক্ষকের গল্প! পদার্থবিজ্ঞানে ২০২৩ সালের নোবেল পুরস্কার পাওয়া অ্যানি এল’হুলিয়ারকে তার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আলাদা করা যায়নি। যখন আমাদের নতুন পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীকে কল দেয়া হয় তখন তিনি লুন্ড ইউনিভার্সিটিতে লেকচারে ব্যস্ত ছিলেন। পরবর্তীতে এক পর্যায়ে তিনি লক্ষ করেন তার ফোনে একাধিক মিস কল রয়েছে। অতঃপর ক্লাস বিরতিতে ফোন রিসিভ করেন তিনি। তবে পুরস্কারের খবরের পর, এল’হুলিয়ার পুনরায় তার শিক্ষার্থীদের কাছে ফিরে যান।
এছাড়াও, অ্যানি এল’হুলিয়ারকে পুরস্কারের সংবাদ দেয়ার সেই ফোন কলের রেকর্ডটিও ফেসবুকে পাবলিশ করেছে নোবেল প্রাইজ কর্তৃপক্ষ। যেখানে শোনা যায় তিনি ক্লাসের জন্য নিজের ব্যস্ততা প্রকাশ করছেন।
উল্লেখ্য, ইলেকট্রন গতিবিদ্যার অধ্যায়নে ‘অ্যাটোসেকেন্ডে আলোর স্পন্দন’ বের করার ফর্মুলা আবিষ্কারের জন্য এবছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনজন। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রয়েল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স তাদের নাম ঘোষণা করেছে। পুরস্কার হিসাবে বিজয়ী তিনজন পাচ্ছেন মোট এক কোটি ১০ লাখ ক্রোনার (৯ লাখ ৮৬ হাজার মার্কিন ডলার)।
রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মানবতাকে পরমাণু ও অণুর ভেতরে ইলেক্ট্রনের জগত অন্বেষণের জন্য নতুন রসদ জুগিয়েছে এই তিনজনের গবেষণা। যেখানে ইলেক্ট্রনগুলো চলে বা শক্তি পরিবর্তন করে, সেখানে আলোর অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত স্পন্দন তৈরি করার একটি উপায় তারা উদ্ভাবন করেছেন, যা দ্রুত প্রক্রিয়াগুলো পরিমাপে ব্যবহার করা যেতে পারে।