প্রবাস মেলা ডেস্ক: গণতান্ত্রিক উৎসবমুখর পরিবেশে ও নির্বাচনের মতো জাতীয় সিদ্ধান্তে দেশে অবস্থানরত প্রায় ১০ কোটি ৪০ লক্ষ নাগরিকগণ নিজেদেরকে সরাসরি সম্পৃক্ত করতে পারছেন। কিন্তু হতাশার বিষয় এই যে, মোট ভোটারের প্রায় ১০ ভাগের ১ ভাগ ভোটার অর্থাৎ ১ কোটি ২০ লক্ষ ভোটার অবহেলিত হয়ে পড়ে রয়েছেন প্রবাসে। কার্যত প্রবাসীগণ এই পবিত্র আমানত ও জাতীয় গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের ব্যাপারে এই মহান নাগরিক অধিকার প্রয়োগের পক্ষে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় ও সরকারি আইন বা নিয়মনীতি নাই; যা বৈষম্য দোষে দুষ্ট। তাছাড়াও দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সবচেয়ে কর্মক্ষম ও স্বালম্বী এই দেশপ্রেমিক রেমিটেন্স যোদ্ধাদেরকে সুকৌশলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এড়িয়ে যাবার প্রবণতা দীর্ঘদিন ধরে পরিলক্ষিত হচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী প্রবাসীদের অন্যতম বৃহৎ সংগঠন ‘কানেক্ট বাংলাদেশ’ বাংলাদেশের উন্নয়ন ও প্রবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিরামহীনভাবে কাজ করছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে আগামী ৩০ ডিসেম্বরে ২০১৮ অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে বিভিন্ন দলের বা জোটের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত ও বাস্তবায়ন করতে নিম্নে প্রদত্ত প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ প্রবাসীর দাবিসমূহ বিবেচনা করার জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
১. প্রবাসে বসবাসরত সকল প্রবাসী এবং তাদের সন্তানদের বা নব প্রজন্মের সদস্যরা নিজ নিজ দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্র বা স্মার্টকার্ড প্রদানের ব্যবস্থা (যা দৈনিক নাগরিকত্বধারীদের জন্য পাসপোর্ট হিসাবে গণ করা হয়) প্রয়োজনীয় আইন ও নিয়মাবলী অচিরেই প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ণ করা।
২. প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য (স্ব স্ব দেশ দূতাবাসের মাধ্যমে, পোস্ট এবং অনলাইন মাধ্যমে) প্রয়োজনীয় আইন এবং নিয়মাবলী অচিরেই প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করা।
৩. বাংলাদেশ প্রবাসীদের সকল নাগরিক অধিকারসহ পরিবারের সদস্যদের জানমালের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করা।
৪. প্রবাসে আহত, নিহত, অসুস্থ বা স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণকালী কর্মী বা রিমিটেন্স প্রেরকের পরিবারের জন্য আর্থিক প্রণোদনা, বিধবা ভাতা, শিক্ষা ভাতা ও চিকিৎসা ভাতা ইত্যাদি প্রদানসহ স্বাবলম্বী করে দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় আইন ও নিয়মাবলী অচিরেই প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করা।
৫. প্রবাসীরা যেন বাংলাদেশের উন্নয়নে অংশগ্রহণ করতে পারে, তার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ সৃষ্টি ও নিরাপত্তা গড়ে তোলা এবং এটি বাস্তবায়নের জন্য প্রতিটি উপজেলাবাসীদের জন্য আলাদা শিল্পপরিষদ গড়ে তোলা, যাতে প্রবাসীরা দেশের উন্নতি জন্য তাদের দক্ষতা এবং শিল্প কারখানা গড়ে গড়ে উঠতে পারে এবং তাদের আর্থিক নিরাপত্তা বিধানে প্রয়োজনীয় আইন ও নিয়মাবলী অচিরেই প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করা।
৬. বাংলাদেশ সার্বিক উন্নয়নের প্রবাসীদের শিক্ষা, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, কারিগরি জ্ঞান এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতার কাজে লাগানো, নিরপেক্ষ বোর্ড গঠেনের জন্য পরামর্শ প্রদান, লাল ফিতা সিস্টেম সহজীকরণ এবং আর্থিক বিনিয়োগের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং বিপনণ ক্ষেত্রে পূজির নিরাপত্তা এবং দীর্ঘসূত্র বা দীর্ঘ সময়সীমার প্রনণতা তিরোহিত করে নিয়মনীতি অচিরেই প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করা।
৭. বাংলাদেশ ও বিদেশে প্রবাসীদের উপর সব ধরনের নির্যাতন ও নিপীড়ন বন্ধ করা এবং পৃথিবীর সব দেশে বসবাসকারীরা মৌলিক ও মানবিক অধিকারসমূহ সমুন্নত ও সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস ও কনস্যুলেট অফিসের তত্ত্বাবধানে বিদেশে বিভিন্ন শহরে মোবাইল অফিসের মাধ্যমে আইনি ও আর্থিক সহায়তা প্রদানে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধিমালা অচিরেই প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করা এবং
৮. যেহেতু দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সবচেয়ে কার্যকর এবং স্বাবলম্বী রেমিটেন্স যোদ্ধাদের মোট ভোটার প্রায় ১০ ভাগ ১ ভাগ ভোটার এবং মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৬ ভাগ ১ ভাগ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ কোন প্রতিনিধিত্ব নেই; সেহেতু জাতীয় সংসদ মহিলা কোটার মতো আনুপাতিক হারে সংসদ মনোনীত করে প্রবাসীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চত করতে প্রয়োজীয়ন আইন ও নিয়মাবলী অচিরেই প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করা।
উপর্যুক্ত বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক দাবিসমূহ দলের, জোটের পক্ষ থেকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচনী ইশতেহারে লিপিবদ্ধ বা সংযোজন করা হলে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনে সবধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
কানেক্ট বাংলাদেশের পক্ষে ১. আব্দুন নূর দুলাল (বাংলাদেশ), ২. এবিএম সালেহ উদ্দিন (যুক্তরাষ্ট্র), ৩. আবু আহমেদ খিজির (যুক্তরাজ্য), ৪. আফসার হোসেন (স্পেন), ৫. আখি সীমা কাওসার (ইতালি), ৬. দিলীপ কর্মকার (কানাডা), ৭. ফজলুর রহমান (জার্মান), ৮. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ (যুক্তরাষ্ট্র), ৯. হাবিব খান (ফ্রান্স), ১০. হাবিবুর রহমান (ফ্রান্স), ১১. হাকিকুল ইসলাম খোকন (যুক্তরাজ্য), ১২. হারুন রাজা (যুক্তরাষ্ট্র), ১৩. হারুনুর রশিদ (জার্মান), ১৪. মো: জাকির হোসেন মাসুম (জাপান), ১৫. হুমায়ূন করীবর চৌধুরী হিরু (ফ্রান্স), ১৬. জাফর আজাদিহগ (ফ্রান্স), ১৭. কামরুজ্জামান ((ইতালি), ১৮. কাজী আসাদুজ্জামান (সুইজারল্যান্ড), ১৯. কাজী জাকারিয়া ((ইতালি), ২০. লুৎফা হাসীন রোজী (যুক্তরাজ্য), ২১. মাজেবুর রহমান (ইতালি), ২২. মজিবুর রহমান (যুক্তরাষ্ট্র), ২৩. মো সামসুল হক পাখী ((ইতালি), ২৪. মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ (কুয়েত), ২৫. মোহাম্মদ আবু তাহের (যুক্তরাষ্ট্র), ২৬ মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া (যুক্তরাজ্য), ২৭. মহসিন মালহার (সিঙ্গাপুর), ২৮. মনসুর চৌধুরী (ফ্রান্স), ২৯. মোস্তফা জামান স্বপন (যুক্তরাজ্য), ৩০. নুরুল আমিন (ইতালী), ৩১. কুদ্দর উল্লাহ (সুইডেন), ৩২. রফিকুল ইসলাম (যুক্তরাষ্ট্র), ৩৩. রহমত উল্লাহ সাদি রুমু (ফ্রান্স), ৩৪, শাহ আলম (ইতালী), ৩৫. শিবলী সাদেক (যুক্তরাজ্য), ৩৬. শিব্বীর আহমেদ (যুক্তরাজ্য), ৩৭. সিকদার গিয়াসউদ্দিন (যুক্তরাষ্ট্র) এবং ৩৮. সৈয়দ মাবুদ (যুক্তরাজ্য) প্রমুখ উক্ত দাবির পক্ষে বিবৃতি দেন ।