আবু তাহের মিয়াজী, দোহা, কাতার
একজন মা যখন প্রথম গর্ভবতী হয়, তখন থেকে স্বামী-স্ত্রী, দাদা-দাদী, নানা-নানী, আত্মীয়স্বজন সবাই মিলে দিবানিশি হৃদয়ের গহীনে আনন্দের স্বপ্নের জাল বুনে ভাসতে থাকে। যে স্বপ্নের ব্যাখ্যা কোন শব্দেই প্রকাশ করা সম্ভব না। এতো এতো স্বপ্ন দেখে যদি বলি লক্ষ-কোটিগুণ বেশী, তবুও সেটা ঠিক নয়। তা এমন এক অনুভূতি যেটা কোন কিছুর সাথে তুলনা করা চলে না। আমার দেখা মতে গ্রামে যারা থাকে পুরো গ্রাম খুঁজলে খুব কম লোকের ঘরেই কাজের মানুষ পাওয়া যায় আর যদিও পাওয়া যায় তাও .৫০% হতে পারে আর না হয় সবার ঘরেই নিজের কাজ নিজেরাই করতে হয় একজন গর্ভবতী সন্তানের মা হয়েও। এই গর্ভবতী শত বেদনা কে উপেক্ষা করে নিজের যত্ন, স্বামীর কাপড় ধোয়া, খাবার রেডি করা, ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা, ঘর গোছানো, শ্বশুর শাশুড়ির খেদমত, অতিথি সেবা ইত্যাদি সংসারে যেসব কাজ থাকে সবই নিজে নিজে করতে হয়। গর্ভবতী মায়ের চোখের জ্বল নিরবে অঝরে ঝরে, ঝর্ণার মতো। বুকের ভেতরটা ফেটে যায় এ কষ্ট কাউকে দেখানো যায়না বলাও যায়না। ঠিকমতো ঘুমাতেও পারেনা, আরামের ঘুম হারাম হয়ে যায়। এ এক নিদারুণ কষ্ট যারা মা হয়েছেন যারা রত্নময় সন্তানের বাবা হয়েছেন এ কষ্ট কেমন তা ভালো করে বুঝতে পারেন।
একজন নারী গর্ভধারণের দিন থেকেই মা। সেদিন থেকে সেই সময় থেকে প্রস্তুতি নিতে থাকে কিভাবে চলাফেরা করা লাগবে, কি খেলে সন্তান সুস্থ-সুন্দর থাকবে, তার সাথে ভাবনার ইয়াত্তা নেই। জীবনের প্রথম সন্তান দুনিয়ার মুখ দেখলে তাকে কিভাবে লালনপালন করবে কোলে নিতে পারবে তো! তাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে পারবে তো? ছেলে সন্তান হলে কি নাম রাখবে, তার হাসিটা কেমন মিষ্টি হবে, তার হাসিতে সকল কষ্ট ভুলে যাবে মায়ার পরশে বুকে জড়িয়ে রাখবে। কান্নাকাটি করলে কিভাবে আদরে সোহাগে বুকে জড়িয়ে থামাবে। রত্নময় সন্তান যখন আস্তে আস্তে বড় হবে তাকে কোন ড্রেস পরালে কেমন হবে। এমন নানাবিধ জল্পনা-কল্পনা সারাক্ষণ মনের বেলকোনির খুঁটিতে নাড়তে-ছাড়তে থাকে। জন্মদাতা বাবারও আনন্দের সীমা থাকেনা। প্রথম সন্তান আসবে। স্ত্রীর নিয়মিত খবর নেয়া, নিয়মিত ডাক্তার দেখানো, ওষুধ খাওয়ানো, ছেলে সন্তান পেলে কি নাম রাখবে, কন্যা সন্তান পেলে কি নাম রাখবে। স্বামী স্ত্রী দু’জন মিলে এনিয়ে গল্পগুজব চলতে থাকে, থাকে স্বপ্নমুখর খুনসুটি, সন্তান তুলতুলে পা দিয়ে গুটিসুটি করে এ রুম থেকে অন্য রুমে হাটবে, আদু আদু কন্ঠে বাব্বা বলে ডাকবে মনের সুখে আনন্দের জোয়ার বইতে থাকবে, কুলে তুলে নিবে, বুকের সাথে লেপ্টিয়ে দুনিয়ার যতো সুখ আছে তা খুঁজে পাবে। আর তখন থেকে শাশুড়িরও দু’চোখে ঘুম নেই। ঘরের প্রথম বউ, প্রতিক্ষণে ভাবতে থাকে নাতী-নাতনী দুনিয়ায় আসলে বউ কি পারবে যত্ন নিতে? যখন কাপড়চোপড় ময়লা করবে পরিষ্কার করতে পারবে তো? কোলে নিয়ে খাওয়াতে পারবে তো? বউ না পারলে কি হবে আমি আছি তো! কিছুক্ষণ পর পর আমি পরিষ্কার করে পাল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখে দেবো, আস্তে আস্তে শিখে নিবে। শাশুড়ি মায়েরও ভাবনার কমতি নেই। সাথে শ্বশুর, মানে নবজাতক সন্তানের দাদা। সরাসরিভাবে যদিও বউয়ের স্বাস্থ্যের খবর নিতে পারেনা, নবজাতক সন্তানের দাদীর কাছ থেকে চুপিচুপি কিন্তু খবর রাখে। আর ভাবতে থাকে কখন আসবে দুনিয়ায় নাতী/নাতনী। কোলেপিঠে আদর করবে চুপিচুপি চকলেট নিয়ে এসে খাওয়াবে। কাঁধে বসিয়ে ঘুরবে, আঙ্গুল ধরে হাঁটবে। নাকেমুখে আদর দিবে।
নবজাতকের ফুফুদেরও ভাবনার কমতি নেই, তখন থেকে ভাইয়ের সন্তানের জন্য প্রস্তুতি হিসেবে ত্রিভুজ আকারে নকশীকাঁথা শিলাই শুরু করে, তাও একটা দু’টি নয়, কয়েকটি। যদিও দূরে থাকে স্বামীর ঘরে। মোবাইলে খবরাখবর নিয়মিত রেখে জড়িয়ে থাকে। সাথে পরামর্শ তো আছেই। কিভাবে চলাফেরা করবে, কি খেলে সন্তান এবং মা ভালো থাকবে।
এদিকে নবজাতকের নানীরও স্বপ্নময় ভাবনার কোন অংশে কমতি নেই বরং অনেক বেশী। নিজের বুকের ধন কন্যার ঘরে প্রথম সন্তান আসবে দুনিয়া আলো করে। মায়ের মনে যেমন খুশির ঢেউ আবার অন্য দিকে হতাশাও চেপে বসে সারাক্ষণ। সন্তান প্রসব করার বেদনা খুব ভালো করে বুঝেন একমাত্র মা। সেজন্য হতাশা এসে ভিড় জমায় বুক পিঞ্জিরে। তবুও আশায় বুক বেধে এগিয়ে যায়। পৃথিবীর সব মা বাবারা চায় তাদের সন্তান সুখে শান্তিতে সুস্থ্য থাকুক। কারণ, যে মা নিজের কথা ভুলে গিয়ে মধ্যরাতে সন্তানের কান্নায় ঘুম থেকে নির্দ্বিধায় উঠে পড়ে ছিলেন বিছানা ছেড়ে। হোক গরম, হোক শীত, মাঝরাতে সন্তানের কান্না বন্ধ করতে গিয়ে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেন নি। মা উঠেপড়ে লেগে গিয়েছিলেন যত্ন নিতে। মা তার বিনিময়ে কি পাবেন, পাবেন না নিশ্চয় এই হিসাব-নিকাশটি একবারও করেন নি। প্রচন্ড শীতের মাঝরাতে চরম ঠান্ডার মধ্য দিয়ে রাত কাটিয়েছিলেন জনম দুখিনী একমাত্র মা। নানা, মামা, খালারাও এর ব্যতিক্রমী নয়। নানাজীও নাতী/নাতনী পাবেন, মামা-খালা পাবে ভাগিনা-ভাগিনী তাদের মনেও আনন্দ।
এ লেখাটি আমার সন্তান তালহা’র মামা এবং মামানিকে নিয়ে। তালহা’র সোহাগ মামা তিন বোনের মধ্যে একজন মাত্র ভাই। তিনি অনেক আশাভরসা নিয়ে গতবছর ২২ এপ্রিল এক অপরিচিতা অচেনা পারিবারিক সিদ্ধান্তক্রমে শুভ বিবাহের মাধ্যমে দাম্পত্যজীবন শুরু করেন। বিবাহের দেড় মাসের মাথায় এক শুভ সংবাদ পেলেন, যে সংবাদ শুনলে যে কেউ বাঁধভাঙ্গা আনন্দে তীর হারিয়ে স্রোতে ভেসে বেড়ায়। তেমনি সংবাদ দিলেন নববধূ শাহনাজ ফারভিন মা হতে চলেছেন। তিনি নারী হিসেবে পূর্ণতা লাভ করতে চেয়েছিলেন, নিজের গর্ভে সন্তান ধারণ করে। দশ মাস দশ দিনের কষ্ট ভুলে যেতে চেয়েছিলেন নিজের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়া সন্তানের মুখ দেখে। কিন্তু নিয়তির লিখন, যায়না খন্ডন। গত ৭ মার্চ রোজ বুধবার গোধূলি লগ্নে মৃত সন্তান প্রসব করেন। সবার হাসি খুশী আনন্দের প্রহরগুলো সব ওইদিন ওইসময় বেদনার স্রোতে ভেসে ভেসে বড্ড ক্লান্ত করে যেন সুনামির বাঁধভাঙা ঢেউ তীর ছাপিয়ে হৃদয়ের চারণভূমি করেছিল প্লাবিত। এ দুঃসংবাদটি তালহা’র আম্মু ফোন দিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে কেঁদে আমাকে বলছিল। স্বপ্নমুখর নবজাতক সন্তানের বাবা আদরের সন্তান হারানোর শোকে বাক্যহারা সাথে তালহার নানী খালা আত্মীয়স্বজন।
তালহা’র নানা কর্মস্থলে বসে অপেক্ষার প্রহর গুণছিল একটা ফোনের কখন শুভসংবাদ পাবে আর নিয়ে আসবে নতুন রঙবেরঙ এর পোশাক। নতুন রঙিলা পোশাক পরিয়ে নাতী/নাতনীকে বুকে জড়িয়ে বরণ করে নিবে। ফোনে সংবাদ পেয়েছে নাতী পেয়েছে ঠিক, তবে নতুন রঙিলা পোশাকের নয় সাদা ধবধবে কাফনের কাপড় নিয়ে আসার। জিজ্ঞেস করলো বউমা কেমন আছে? শুনল ভালো আছে। নাতীর এ দুঃসংবাদ পেয়ে বুকের ভিতর পাহাড় সমানকষ্ট নিয়ে সোয়া ঘন্টার মধ্যে বাড়ী পৌঁছেন নাতীকে দাফন করতে। বাড়ী এসে নাতীকে গোসল দিচ্ছেন, এমন সময় নবজাতক শিশুর জনম দুঃখিনী মা তার বুকের নাড়ি ছেড়া ধন, কষ্টের ফসল কলিজার টুকরো সন্তানকে শেষবারের মতো দেখতে চেয়েছে জানালা দিয়ে।
নবজাতক দুনিয়ায় আসার ২ ঘণ্টা পরে জনম দুঃখিনী মা তার বুকের নাড়ি ছেড়া ধন কষ্টের ফসল কলিজার টুকরো সন্তানকে শেষবারের মতো দেখে হার্ট-অ্যাটাক করে দাঁড়ানো থেকে পড়ে সাথে সাথে সন্তানের শোকে তিনিও সবাইকে দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে মৃত্যু বরণ করে হারিয়ে যায় চিরতরে না ফেরার দেশের উদ্দেশ্যে। কে জানতো এই দেখা দেখে তিনিও শেষ হয় যাবেন?
তালহার আম্মু আমাকে এ খবরটি দিতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। আমিও পুরোপুরি বাক্যহারা। সান্ত¡না দেবার মতো ভাষা আমিও হারিয়ে ফেলি। জনম দুঃখিনী মা হয়তো চেয়েছিলেন লাল টুকটুকি বৃষ্টি মাখা রোদে বুকের মানিককে নিয়ে ঘুরবে, বুকে মাথা রেখে খোকার অভিমান শুনবে, মুক্তা মাখা মিষ্টি হাসিতে সকল দুঃখকষ্ট ভুলবে, আরো কত বায়না ধরবে খোকা, সাধ্যমত চেষ্টা করবে। দুনিয়ার সকল মায়েরা এমন হাজারো স্বপ্ন বুনে। তিনি হয়তো বুঝতে পারলেন স্বপ্নময় স্বপ্নগুলো স্বপ্ন-ই রয়ে গেল পূর্ণ হলো না, তাই হইতো এই কষ্টের ভার সইতে পারেন নি।
সেই চরম দিনটিতে আমি যা শুনলাম। জন্মিলে মরিতে হয়। একথা ধ্রুব সত্য। তবে প্রতিটি মানুষের ইচ্ছা থাকে স্বাভাবিকভাবে যেন মৃত্যু হয়। কিন্তু মৃত্যু তো দিন তারিখ সময় দিয়ে হয় না। মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যু মেনে নিতে যেখানে কষ্টের অনুভূতিতে আঘাত লাগে, সেখানে অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর কত যে কষ্টের তা ভুক্তভোগী ছাড়া অন্য কেউ বুঝতে পারে না। কন্যার মৃত্যুতে দুঃখিনী মা ছুটে এলেন কন্যার স্বামীর বাড়ী, মায়ের কান্দনে আকাশপাতাল হল ভারি। মায়ের বড় কষ্টের দৃষ্টি আকাশের নীল ভেদ করে প্রিয় মুখপানে যেন থমকে দাঁড়িয়েছিল, সময় দিগি¦দিক ছোটাছুটি করছিল অশান্ত কষ্টে ওই মন। এই বুকের ধন কন্যাকে হারিয়ে পাগলপারা হয়ে তিনদিন হাসপাতাল ছিলেন জনম দুঃখিনী ‘মা’ আর বোনের শোকে শোকাগ্রস্ত হয়ে বড় ভাইও হাসপাতালে স্থান করে নেয় মায়ের সাথে।
তালহার নানাও! ছেলের বউমাকে বউ মনে করেন নি, উনি বলতেন আমার মেয়ে ‘শাহনাজ’। আমার জানা মতে উনি বউ মায়ের জন্য সাইড ব্যাগ থেকে শুরু করে যাবতীয় সব কিনে আনতেন। কখন কি লাগবে কি খেতে চায় সাধ্যমত খাওয়ানো পরানো ইচ্ছের সব নিজের মেয়ে মনে করে ভালোবেসে পূর্ণ করতেন। সেই বউমায়ের মৃত্যুতে শোকাগ্রস্ত হয়ে তিনিও হাসপাতালে ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। আমার দেখা মতে তিনি একজন বউমায়ের নিকট শ্বশুর ছিলেন না ছিলেন জন্মদাতা পিতার মতো! তালহার নানী ও বউমাকে পেয়ে খুব আনন্দে খুশিতে দিন কাটাচ্ছিলেন। ঘরে আর কেউ নেই বউ আর শাশুড়ি ছাড়া। নিজের মেয়ের মতো আদরে আগলে রেখেছিলেন। গর্ভ অবস্থায় বউকে কোন কাজ করতে দেয়নি, বউও খুব সম্মানের সাথে মায়ের মর্যাদা দিয়ে কাছে থেকেছেন। সেই আদরের বউ হারিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন। স্বজন হারিয়ে আজ গভীর শোকগ্রস্ত। এইতো জীবন পেয়ে না পাওয়া, পেয়ে হারানো হাসি বেদনার নিয়তির লিখন। সামান্য অভিমানে অনেক সময় দু’চোখে জলাধার নামে। আবার অনেক বড় কষ্টেও কখনো কখনো বুকের ভেতরটা শুধু বোবা কান্নায় ভারী হয়ে উঠে। দু’চোখ থাকে প্রতিক্রিয়াহীন। তালহার সোহাগ মামা স্ত্রী-কে হারিয়ে হঠাৎ শোকে পাথর হয়ে স্বশব্দে কাঁদতে পারেনি বলে প্রতিদিনই বুকের মাঝে এক অব্যক্ত ব্যাথার জ্বলুনি অনুভব করে। আজ এই ভাইটিকে স্বান্তনা দিতে গিয়ে সেই অব্যক্ত বেদনারা অশ্রু হয়ে গড়িয়ে পড়ে দু’চোখ বেয়ে। আমি নিজেই ইমোশনাল হয়ে পড়ি। তাদের স্বামী স্ত্রী নববিবাহিত জীবনের ১১ মাসের কত কত স্মৃতিই না জমিয়ে রেখেছে বুকের গহীনে। চিরবিচ্ছেদের বেদনায় সেই স্মৃতির ঝাঁপিই হয়ে উঠে একমাত্র অবলম্বন। ভাইটি হয়তো একটু একটু করে সেই স্মৃতিচারণ করেই জ্বলছে।
দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবার মাত্র দু’দিন আগে তালহার আম্মুর নিকট থেকে আমার নাম্বার নিয়েছিল কথা বলার জন্য। তবে নাম্বারটি ইমু নাম্বার ছিলনা বলে কথা আর বলা হল না। গত ১১ মাসে যে আমার নাম্বার চায়নি, এতো আগ্রহ নিয়ে কথা বলেনি, কি এমন কথা ছিল আমার সাথে? তা আর আমারও জানা হল না!
একজন নববিবাহিত স্বামী ১১ মাসের মাথায় নবজাতক সন্তানসহ প্রিয়তমা স্ত্রী হারানোর ব্যাথা কতটা দুঃখের কতটা কষ্টের কতটা বেদনার যে হারায় সেই বুঝে। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত দুচোখের সুনামিতে সেই দুঃখকষ্ট শেষ হয় না। হয়তো কষ্টের কিছুটা কমবেশি হয় বাস্তবতার চাপে, কিন্তু যখন মনে হয় তখন সুনামির চেয়েও বেশি প্লাবিত হয় দু’চোখ। সেই প্লাবনে কোন ছল থাকেনা, মনের ভিতর দুঃসহ বেদনার ঝড় মুহূর্তে সবকিছু লন্ডভন্ড করে যায়, খড়কুটার মতো উড়তে থাকে অবশিষ্ট সুখগুলোও, বিষাদিত করে দেয় সময়, জীবন, বাঁধভাঙা কান্নায় ভাসে নয়ন। কিছুতেই সেই কান্না আটকানো যায় না।
সোহাগ ভাইয়ের হয়তো কবির ভাষায় স্রষ্টাকে বলতে ইচ্ছে করে,
-ওগো দয়াময়
কেন এত দুঃখ দিলে তুমি আমায়…
নীরবে ভাসলাম কত চোখের জলে
কতনা দুঃসহ বেদনায় পুড়ে পুড়ে হই ক্ষয়!