হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: নিউইয়র্কে বাংলাদেশের নতুন কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন।সম্প্রতি নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে নিযুক্ত প্রেস মিনিস্টার শামীম আহমেদও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
নিউইয়র্কে বাংলা ভাষার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সম্পাদক, পরিচালক ও সাংবাদিকরা ছাড়াও নিউইয়র্কে বাংলাদেশের ডেপুটি কনসাল জেনারেল শাহেদুল ইসলাম, হেড অব চ্যান্সেরি চৌধুরী সুলতানা পারভিন, বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) নূরএলাহী মিনা, কনস্যুলেটের প্রটোকল অফিসার আসিফ আহমেদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। চলতি মাসের গোড়ার দিকে নবনিযুক্ত কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা তার নতুন কর্মস্থলে যোগদানের পর প্রথমবারের মত মিডিয়ার সাথে মতবিনিময় করলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে তিনি বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা তার স্বাগত বক্তব্যে উপস্থিত সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে সকল মিডিয়ার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড আমেরিকানদেন মাঝে তুলে ধরার পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশীদের সেবা নিশ্চিত করাই তার প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব। প্রবাসে বাংলাদেশের ঐতিহ্য, কৃষ্টি-সংস্কৃতি বিকাশে নিজেকে সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে প্রতিদিন দেড়শ থেকে দুইশ লোক সেবা নিচ্ছেন। তাদের যাতে যথাযথ সেবা দিতে পারি তার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশের প্রথম নারী কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা বলেন, ইতোপূর্বে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে উপ স্থায়ী প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করার সুবাদে নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি কমিউনিটি সম্পর্কে তার ধারণা রয়েছে। জাতিসংঘ আর কনস্যুলেটের কাজের পার্থক্য রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মিশনের চেয়ে কনস্যুলেটের দায়িত্ব অনেক বেশী। তিনি বলেন, আমি উন্নয়ন কূটনীতির মাধ্যমে আমেরিকান কমিউনিটিতে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চাই। কাজের নতুন ধারা সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে চাই আমেরিকানদের কাছে। কনস্যুলেটকে ‘জনবান্ধব বান্ধব’ কনস্যুলেটে পরিণত করতে চাই।
কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা বলেন, নতুন দায়িত্বে আসার আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মহা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন ছাড়াও কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রাত জেগে কাজ করারও অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। তিনি বলেন, একজন নারী হিসেবে নয়, একজন কূটনীতক হিসেবেই সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী দু’জনই তার উপর আস্থা রেখে তাকে নতুন দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিয়েছেন। তিনি এ দায়িত্ব পালনে সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিকগণ নতুন কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসাকে স্বাগত জানিয়ে তাদের পরামর্শমূলক নানা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এর মধ্যে কনস্যুলেটের নিজস্ব ভবন প্রতিষ্ঠা, কনস্যুলেটের সেবার মান বৃদ্ধিসহ ইত্যাদি। সাংবাদিকরা তিন থেকে ছয় মাস পর পর মিডিয়ার সাথে এ ধরণের মতবিনিময় করার অনুরোধ জানান। সিজি সাদিয়া ফয়জননেসা সাংবাদিকদের পরামর্শ/মতামতের আলোকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে জানান।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন তার বক্তব্যে বাংলাদেশ মিশন ও কনস্যুলেট অতীতের মতো আগামী দিনেও বাংলাদেশ সরকার ও কমিউনিটির স্বার্থে যৌথভাবে কাজ করে যাবে বলে উল্লেখ করেন। তিনি ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম’র প্রস্তাবে রাষ্ট্রীয় অর্থ স্বাশ্রয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান বাংলাদেশ মিশন ও কনস্যুলেটের যৌথ আয়োজনে কনস্যুলেট ভবনে করার বিষয়ে একমত পোষণ করেন।
উল্লেখ্য, পেশাদার কূটনীতিক সাদিয়া ফয়জুন নেসা নিউইয়র্কে বাংলাদেশের ১৫তম এবং প্রথম নারী কনসাল জেনারেল হিসাবে যোগ দিয়েছেন। তিনি সদ্য বিদায়ী কনসাল জেনারেল মো. শামীম আহসানের স্থলাভিষিক্ত হন।