হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: আদালতের নির্দেশে বাংলাদেশ সোসাইটি নিউইয়র্কের ২১ অক্টোবর রোববার অনুষ্ঠেয় নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক’র আসন্ন নির্বাচন ১৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার স্থগিত করে দেন কুইন্স সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় জজ জেনিস এ টেইলর।
নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের দু’সদস্য প্রার্থী আলী আকবর ও জেড আর চৌধুরী এবং সোসাইটির সদস্য শরিফুল ইসলামের সোসাইটির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় কোর্ট এ আদেশ প্রদান করেন। এরপর এই আদেশের বিরুদ্ধে ১৯ অক্টোবর শুক্রবার বাংলাদেশ সোসাইটি এবং বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আদালতে মোশন হলেও নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিতের পূর্বের আদেশ বহাল রেখে আগামী ৩০ অক্টোবর শুনানির পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেবেন বলে জানিয়েছেন আদালত। আদালতের এই আদেশের পরই রোববারের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন কমিশন।
বাংলাদেশ সোসাইটির বর্তমান কার্যকরী পরিষদ শুক্রবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন নিয়ে আদালতের স্থগিতাদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করেন। নিউইয়র্ক সিটির হুইটনি অ্যাভিনিউর বাংলাদেশ সোসাইটির নিজম্ব ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি কামাল আহমেদ, সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান জামাল আহমেদ জনি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ আবদুল হাকিম, রুহুল আমিন সরকার, কায়সারুজ্জামান কয়েস ও খোকন মোশারফ, ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্য আজিমুর রহমান বুরহান, কার্যকরী পরিষদের সহ সভাপতি আব্দুল খালেক খায়ের, সহ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ এমকে জামান, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক নাদির এ আইয়ুব, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোহাম্মদ রিজু, ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক মোঃ নওশেদ হোসেন, সাহিত্য সম্পাদক নাসির উদ্দীন আহমদ, কার্যকরী সদস্য মোহাম্মদ আজাদ বাকির, মোহাম্মদ সাদি মিন্টু, আবুল কাসেম চৌধুরী, ফারহানা চৌধুরী প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটির তিনজন সদস্যের দায়ের করা মামলায় আদালত ২১ অক্টোবরের নির্বাচন স্থগিত করেছেন। সোসাইটির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে শুক্রবার মোশনও করা হলেও আদালত আগামী ৩০ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। এদিন শুনানি শেষে আদালতের পরবর্তী নির্দেশের ওপর ভিত্তি করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান জামাল আহমেদ জনি বলেন, আদালতের নির্দেশের বাইরে নির্বাচন কমিশনের যাওয়ার সুযোগ নেই। আগামী ৩০ অক্টোবর শুনানির পর আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে। তিনি বাংলাদেশ সোসাইটির সকল ভোটার, প্রার্থী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ২১ অক্টোবর রোববারের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হলো।
জামাল আহমেদ জনি বলেন, আদালতের নির্দেশে এ নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় ফলে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে বাংলাদেশ সোসাইটি। বিশেষ করে ভোটকেন্দ্র বুকিং, ভোটিং মেশিন, মিডিয়ার বিজ্ঞাপন ইত্যাদি বাবদ অনেক ব্যয় হয়ে গেছে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইতিমধ্যে প্রায় ৬০ হাজার ডলার খরচ হয়ে গেছে। নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় প্রার্থীরাও বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ সোসাইটি ’র এ নির্বাচনে কার্যকরী পরিষদের ১৯টি পদে ‘নয়ন-আলী’ প্যানেল থেকে ১৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হলেও পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক মনোনয়নপত্র বাছাইকালে দু’সদস্য প্রার্থী আলী আকবর ও জেড আর চৌধুরীর মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক ও সমর্থকের স্বাক্ষর না থাকায় তাদের মনোয়নপত্র বাতিল করে দেয়া হয়। নির্বাচন কমিশনের চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের ১৭ জনের নাম প্রকাশিত হয়।