প্রবাস মেলা ডেস্ক: ৯ মার্চ ২০১৯ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি, শাহবাগ, ঢাকার শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত আবৃত্তিশিল্পী নাসরীন সুলতানা ছুটি-র একক পরিবেশনা আবৃত্তি, শ্রুতিনাটক ও সংগীতের আয়োজন করা হয়। একই সাথে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো একই মঞ্চে একই শিল্পীর আবৃত্তি ও সংগীতের সিডির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
“একি লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ” শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ এবং সংগীত আচার্য ড. রেজোয়ান আলী। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনায় ছিলেন অনন্যা গোস্বামী।
ময়মনসিংহে মো. হোসেন আলী ও ফাতেমা হোসেন এর ঘর আলো করে নাসরীন সুলতানা ছুটি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৮২ সালে। জীবনসঙ্গী জিহান আল মামুন ও একমাত্র পুত্র সাহির আল ওয়ালী পূণ্যকে নিয়ে এখন তাঁর পথচলা। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছোটবেলা থেকেই আবৃত্তি, নাটক ও খেলাধুলায় ছিলেন তিনি পারদর্শী। আবৃত্তি ও বেডমিন্টনে জাতীয় পুরস্কার সেই স্বীকৃতি। বাংলাদেশ বেতারের তিনি তালিকাভুক্ত শিল্পী। একই সাথে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন সময়ে। ছায়ানট থেকে রবীন্দ্র সংগীতের কোর্সের পাশাপাশি আবৃত্তি ও নাটকের সংগঠন কণ্ঠশীলনে দীর্ঘদিন সম্পৃক্ত থেকে একক ও দলীয় আবৃত্তি, মঞ্চনাটকসহ সকল কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করেছেন।
এছাড়াও উদীচী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনেও তার সদম্ভ পদচারণা ছিলো। বর্তমানে ব্যাংক কর্মকর্তা হয়েও এমন একটি অনুষ্ঠান করার জন্য নাসরীন সুলতানা ছুটিকে অভিনন্দন জানান বক্তারা। ‘না পাঠানো চিঠি’ নামক আবৃত্তি সিডি এবং ‘তুমি এসো কাছে’ শীর্ষক রবীন্দ্র সংগীতের সিডির মোড়ক উন্মোচন এর পরে নাসরীন সুলতানা ছুটির একক পরিবেশনা শুরু হয়। ‘সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে শোন শোন পিতা … ’ রবীন্দ্র সংগীতের মধ্য শুরু করে একের পর এক আবৃত্তি করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘তোমায় খোঁজা শেষ হবে না মোর’; মল্লিকা সেনগুপ্তের ‘কন্যাশ্লোক’; কবিতা সিংহের ‘আমি সেই মেয়েটি’; দেবব্রত সিংহের ‘বানভাসি’; বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘তিন পাহাড়ের’; সৈয়দ শামসুল হকের ‘পরানের গহীন ভিতর’; জয় গোস্বামীর ‘প্রাক্তন’; সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের ‘হাল ছেড়ো না মাঝি’; সুকুমার রায়ের ‘ঠিকানা’’; কাজী নজরুল ইসলামে ‘মন্দির ও মসজিদ’। এরপর হুমায়ূন আহমেদের শ্রুতিনাটক ‘হাসান আলী’ উপস্থাপন করেন। সবশেষে রবীন্দ্র সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন নাসরীন সুলতানা ছুটি।
মিলনায়তন ভর্তি দর্শকের প্রতিক্রিয়া ছিলো উৎসাহব্যঞ্জক। মুহুর্মুহু করতালিতে ছিলো যার প্রকাশ। মঞ্চ নির্মাণে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন হেনড্রি পলাশ। অম্লান বিশ্বাসের আলোর খেলাও মনোমুগ্ধকর করেছে অনুষ্ঠানটিকে। সবশেষে মনে এক ভালো লাগার পরশ নিয়ে ফিরলেন শ্রোতারা।