প্রবাস মেলা ডেস্ক:
ড. মাহমুদুর রহমান
বিএনপি সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার শাসনামলে সারা দেশে ১২৪টি মামলা করা হয়েছিল। ২০১০ সালের জুনে প্রথমে দফায় আমার দেশ বন্ধ করাসহ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে আটক করা হয়। দ্বিতীয় দফায় ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল আমার দেশ বন্ধ করে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে দেয়া হয় বিভিন্ন মামলা। রিমান্ডে নিয়ে চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। প্রবাস জীবনে প্রথমে মালয়েশিয়া এবং পরে তুরস্কে ছিলেন তিনি। প্রবাসে থেকেই তিনি ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ছিলেন ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কট্টর সমালোচক। সাড়ে ৫ বছর পর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন তিনি।
পিনাকী ভট্টাচার্য
পেশায় চিকিৎসক, ফ্রান্সে অবস্থান করা মানবাধিকারকর্মী পিনাকী ভট্টাচার্য। পিনাকী ভট্টাচার্য বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়ে একের পর এক ভিডিও বক্তব্য হাজির করেছেন জনগণের সামনে। সরকারের নানা অপকর্মের তীব্র সমালোচনা করেছেন। প্রবাসে থাকলেও দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়ে সব সময় সরব ছিলেন।
মুশফিকুল ফজল আনসারী
সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে স্টেট ডিপার্টমেন্ট-বাংলাদেশের পরিস্থিতি দিনের পর দিন উপস্থাপন করে গেছেন তিনি। বাংলাদেশের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে জানতে চেয়েছেন জাতিসংঘ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান। জবাবদিহির আওতায় আনতে চেয়েছেন ক্ষমতাবানদের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সব সময় সরব থেকেছেন। অনুপ্রাণিত করেছেন কোটি কোটি গণতন্ত্রকামী মানুষকে।
ড. কনক সারোয়ার
সাংবাদিক ড. কনক সারোয়ার ইউটিউব টকশোয় সরকারের মুখোশ উন্মোচন করে গেছেন। এজন্য তাঁর পরিবারের ওপর অনেক নির্যাতন হয়েছে। কিন্তু তিনি পিছু হটেননি, দমে যাননি। সরকারের দুর্নীতি আর অনিয়মের ঘটনা বারবারই সামনে নিয়ে এসেছেন।
ইলিয়াস হোসেন
জনপ্রিয় অনুসন্ধানী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন। সরকারের রোষাণলে পড়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। বিদেশে অবস্থান করলেও ইলিয়াস হোসেন নানা তথ্যনির্ভর সংবাদ প্রকাশ করেন নিজের ফেসবুক আইডি এবং ইউটিউব চ্যানেলে। বেশ কয়েকটি অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশ করে আলোড়ন তোলেন দেশের মিডিয়া পাড়ায়।
রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী
রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী লন্ডনে বসবাস করেন। তিনি স্যাটেলাইট টিভি ‘চ্যানেল আই’র ইউরোপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। বহির্বিশ্বে ফয়সল চৌধুরীই প্রথম স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের অন্যায়-অত্যাচার, গুম-খুনের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচার শুরু করেন। তার সঞ্চালনায় চ্যানেল আই-ইউকেতে সম্প্রচারিত টকশো ‘স্ট্রেইট ডায়ালগ’ বহির্বিশ্বে ব্যাপক জনপ্রিয় এবং বাংলাদেশের নির্যাতিত মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠে।
মরহুম ক্যাপ্টেন (অব.) শহীদ ইসলাম
মরহুম ক্যাপ্টেন (অব.) শহীদ ইসলাম ছিলেন একজন সত্যনিষ্ঠ দেশপ্রেমিক সাংবাদিক। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কানাডা থেকে তিনি বাংলাদেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে গেছেন। বাংলাদেশের পরিস্থিতির ক্ষুরধার বিশ্লেষণ করে জনগনকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন।
ড. তাজ হাশমী
ডক্টর তাজ হাশমী বাস করেন কানাডায়। অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের মধ্যে তিনি গবেষণাধর্মী সমালোচনায় মুখর ছিলেন। তার লেখা অনেক বইয়ের মধ্যে ব্যাপক আলোচিত ‘ফিফটি ইয়ার্স অব বাংলাদেশ’। তথ্যসমৃদ্ধ বইটি পড়লে তাজ হাশমীর জ্ঞানের গভীরতা সহজেই বোঝা যায়। তাজ হাশমী কানাডায় বসে শেখ হাসিনা সরকারের তীব্র সমালোচনা করে আলোচিত হন।
জুলকারনাইন সায়ের খান সামি
যুক্তরাজ্যপ্রবাসী অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান সামি ব্যাপকভাবে আলোচিত ছিলেন কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আলজাজিরার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের সূত্র হয়ে। সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং তাঁর ভাইদের নিয়ে ‘All the Prime Minister’s Men’ আল-জাজিরার ওই প্রতিবেদন দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছিল। এরপর একের পর এক নানা অনুসন্ধানী রিপোর্ট করেছেন সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রকাশ করেছেন ভয়ংকর সব তথ্য। প্রকাশ করেছেন বহু গোপন নথি, যা সরকারকে বিপাকে ফেলে দেয়।
তাসনীম খলিল
খ্যাতিমান সাংবাদিক তাসনীম খলিল। সুইডেনভিত্তিক নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক। গত কয়েক বছরে একের পর এক অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশ করে সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মুখোশ উন্মোচন করেছেন। কুখ্যাত আয়নাঘরের বিষয়টি নেত্র নিউজই প্রথম সামনে নিয়ে আসে। গুম, ক্রসফায়ার নিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ করে তোলপাড় তৈরি করে সারা দুনিয়ায়।
ফাহাম আব্দুস সালাম
চিকিৎসাবিজ্ঞানী ফাহাম আব্দুস সালাম স্বৈরাচারী সরকারের একজন কঠোর সমালোচক ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে মলিকুলার থেরাপিউটিক্স নিয়ে গবেষণা করে লাভ করেন পিএইচডি ডিগ্রি। শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় এ বিজ্ঞানী ফেসবুকে সরকারের অনিয়ম এবং অনাচার নিয়ে নিয়মিত লিখতেন। এছাড়া ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমেও সরকারের নানা অনিয়মের উপাত্তনির্ভর সমালোচনা করতেন।
আব্দুর রব ভুট্টো
লন্ডন থেকে আব্দুর রব ভুট্টো শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জনমত গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। দেশে থাকতে তিনি সাংবাদিকতা করতেন। সরকারকে নিয়ে কনটেন্ট প্রচারের কারণে মৌলভীবাজারের গ্রামের বাড়ি থেকে তার দুই ভাইকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা সংস্থা। ১৪ বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ক’দিন পূর্বে ২ সপ্তাহের জন্যে দেশে এসেছিলেন।
কাজী শামীম আহসান
কাজী শামীম আহসান কাতার প্রবাসী। পাশাপাশি একটি ইন্টারন্যাশনাল বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা। ফ্যাসিস্ট সরকারের গোপন তথ্য-উপাত্ত জনগণের সামনে অনলাইনে প্রকাশ করে তিনি ব্যাপক আলোচনায় আসেন।
শামসুল আলম লিটন
বিশিষ্ট সাংবাদিক, বিলেত ও বাংলাদেশের মিডিয়া অঙ্গনের সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব শামসুল আলম লিটন। বিএনপি সরকারের সময় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ এর এপিএস ছিলেন তিনি। তারপর তিনি লন্ডনে পাড়ি জমান এবং বিলেতের সাপ্তাহিক সুরমা পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় শামসুল আলম লিটন এর ভাই নূর আলম চৌধুরী পারভেজকে তুলে নিয়ে যায়। প্রবাসে বিভিন্ন প্রতিবাদ সমাবেশ সংগঠিত করেছেন তিনি। অনলাইন ও অফলাইনে হাসিনা সরকার পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন শামসুল আলম লিটন।
মোস্তাফিজুর রহমান টিটো
যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডাভিত্তিক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম নাগরিক টিভি। এটি পরিচালনা করেন মানবাধীকার কর্মী মোস্তাফিজুর রহমান টিটো। প্রায় এক দশক ধরে সরকারের অনুগত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দুর্নীতি এবং অনিয়ম তুলে ধরে আলোচনায় ছিল এ প্ল্যাটফর্মটি। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের শোষণমূলক নীতি, গুম, খুনের বিষয়েও সোচ্চার ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান টিটো।
নাজমুস সাকিব
যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডাভিত্তিক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম নাগরিক টিভি। নাগরিক টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক নাজমুস সাকিব। প্রায় এক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দুর্নীতি এবং অনিয়ম নিয়মিত তুলে ধরেছেন তিনি। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের শোষণমূলক নীতি, গুম, খুনের বিষয়েও সোচ্চার ছিলেন নাজমুস সাকিব।
তাসলিমা তাজ
তাসলিমা তাজ যুক্তরাজ্য প্রবাসী। গত ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে অনলাইন এক্টিভিস্ট হিসেবে জনমত গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। বিশেষ করে ভারতের আগ্রাসন নীতির বিরুদ্ধে টক’শোতে তুখোড় বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে মানুষকে সচেতন করেছেন।
হাসিনা আক্তার
হাসিনা আক্তার একসময় লন্ডনে চ্যানেল আই, ইউরোপে নিউজ প্রেজেন্টার হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু করেন। পরে অনলাইনে টকশো শুরু করে আলোচিত হন। টকশোর মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন।
এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র থেকে এম. রহমান মাসুম, নায়েব আলী, যুক্তরাজ্য থেকে শাহ্ আলম ফরুক, জার্মানি থেকে আর.এ. খান, কানাডা থেকে মেজর (অবঃ) দেলোয়ার হোসেন, সাইফুর রহমান সাগর, অস্ট্রেলিয়া থেকে রাহাত শান্তনু, আব্দুল্লাহ ইউসুফ শামীম এবং ইতালি থেকে আখী সীমা কাওসার প্রমুখ অনলাইন এক্টিভিস্টরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সরব থেকে জনমত গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন।