প্রবাস মেলা ডেস্ক: দেশে ফিরেছেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন। গত ১৩ নভেম্বর ৩৭ মামলা মাথায় নিয়ে দেশে আসেন বিএনপি জামায়াত শাসন আমলের এই প্রতিমন্ত্রী।
জানা যায়, বিভিন্ন মামলায় ২০১০ সালের ৪ মার্চ থেকে টানা ৪৪৯ দিন কারাবরণ শেষে জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসা ও গবেষণা কাজে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন মিলন। সেখানে কারিগরি শিক্ষার মানোন্নয়ন নিয়ে করেছেন পিএইচডি। গত ১০ নভেম্বর দেশটির ইন্টারন্যাশন্যাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে সাবেক এই শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর গবেষণা শেষ হয়।
এদিকে বাংলাদেশে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। চাঁদপুর-১ আসনে বিএনপি থেকে মিলনের পক্ষে মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন স্ত্রী নাজমুন নাহার বেবী। আজ ১৮ নভেম্বর রবিবার থেকে চার দিন দলের চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎ চলবে। তাই অনেকটা গোপনেই প্রায় চার বছর পর গত মঙ্গলবার দেশে আসেন মিলন। ওই দিন সকালে ঢাকায় নেমেই জামিনের আশায় আত্মসমর্পণ করতে রওনা দেন চাঁদপুরের আদালতের দিকে; কিন্তু পুলিশ দেখে ফিরে আসেন। একইভাবে পরপর তিন দিন আদালতে গিয়েও আত্মসমর্পণ করেননি। মূলত গ্রেপ্তার এড়াতেই এমনটি করছেন বলে জানান।
এহসানুল হক মিলন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ওয়ান-ইলেভেনের সময় কোনো মামলা হয়নি; কিন্তু ২০০৯ সালের নির্বাচনের পর যে মামলাগুলো হয়েছে তা হাস্যকর, সেটা সবাই জানে। তবু আইন-আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমি নিয়মিত আদালতে হাজিরা দেওয়াসহ জেলও খাটি। এর পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মালয়েশিয়া যাই। সেখানে চিকিৎসার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার মানোন্নয়ন নিয়ে পড়াশোনা করি। এ সময় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছি।
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চাচ্ছে। এ জন্য আমার পক্ষ থেকে মনোনয়ন নেওয়া হয়েছে। এখন আমি আদালতে আত্মসমর্পণ করতে চাচ্ছি; কিন্তু অজ্ঞাত কারণে আদালতে হাজিরা দেওয়ার আগেই আমাকে গ্রেপ্তারের ষড়যন্ত্র চলছে।’ এ জন্য তিনি নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
পুলিশের তৎপরতার জবাবে মিলন বলেন, ‘দেশে ফেরার আগে আমার নির্বাচনী এলাকা কিংবা আদালতে এতো পুলিশ মোতায়েন ছিল না। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ইসির হাতে; কিন্তু একজন প্রতিনিধি আদালতের কাছে আত্মসমর্পণ করতে গেলেও তাকে ধরে নিতে হবে, এটা কী ধরনের সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষণ?
এলাকার নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে সাবেক এই শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৯ সালে আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছে। ২০০৯ সালে এমপি হয়েও মামলার জালে সংসদের বাইরে থাকতে হয়েছে। আদালত পরে আমার পক্ষে রায় দিলেও প্রতিহিংসার কারণে জনগণের সেবা করতে পারিনি। নকলের বিরুদ্ধে সারাদেশে যে আন্দোলন করেছি, তাতে মানুষ বিএনপি এবং আমাকে মনে রেখেছে। গত কয়েক বছর আমি এলাকায় না থাকলেও নেতাকর্মী-ভোটারদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছি। আমার স্ত্রী মাঠে কাজ করছে। নেতাকর্মীরা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে আরও ভালো মনোবল নিয়ে আছে। এখন সুষ্ঠু ভোট হলে জনগণ অতীতের চেয়েও বেশি ভোটে আমাকে নির্বাচিত করতে প্রস্তুত।’