অসীম বিকাশ বড়ুয়া, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে: হাজার হাজার বাংলাদেশিদের আশা আকাঙ্খা ও দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার স্বপ্ন মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে অবশেষে মাত্র দুই মাস পর পুণরায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া । সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে আসা যাত্রীদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটির সরকার ।
১৬ এপ্রিল ২০২১, শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলের বাংলাদেশ দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারী ছড়িয়ে পড়ার কারণে গত বছরের ২৩ জুন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্যে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা এবং অনিয়মিত বিমান চলাচল স্থগিত করে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার। এর ফলে কোরিয়া গমণেচ্ছুক বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এবং ইপিএস কর্মীর শিক্ষা ও কর্মজীবন হুমকির মুখে পড়ে।
পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কোরিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস শুরু থেকেই এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন। সরকারের নিরবচ্ছিন্ন কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে দীর্ঘ আট মাস পর বাংলাদেশের নাগরিকদের ওপর আরোপিত ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ কোরিয়া। এ সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুণরায় দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা চালু হয়। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গত দুই মাসে কোরিয়াতে আসার পর মোট ৩৩ জন বাংলাদেশির করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে।
নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ইপিএস কর্মীদের একমাত্র প্রশিক্ষক ‘শেখ মুরাদ হোসেন’ স্যার বলেন, এবার আমরা সকলে প্রচুর পরিমাণে প্রচারণা চালানোর পরেও ‘ইপিএস’ কে নিরাপদ রাখতে পারলামনা। বিশেষ করে কোরিয়া আসার পূর্বে নিজে থেকেই নিরাপদ অবস্থানে না থাকার কারণে বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার খেসারত দিতে হলো।
নতুন করে ভিসা নিষেধাজ্ঞার পর থেকেই সবার মন খারাপ করে দুঃখ, আবেগ, হতাশা নিয়ে অনলাইনে কমেন্টের ঝড় তুলেছে শত শত বাংলাদেশিরা। তেমনি একজন কোরিয়া প্রবাসী রনি জামান বলেন, ভিসা ইস্যু হওয়ার পরেও ফ্লাইট জটিলতায় হাজার হাজার ইপিএস কর্মী যখন কোরিয়া যেতে পারছেনা তখন পরপর দুইবার ভিসা নিষেধাজ্ঞা পড়ায় আপনাদের কি লজ্জা করেনা? তিনি আরও বলেন, কোরিয়া ভিসা প্রত্যাশীদের স্বপ্নের কফিনে প্যারাক ঠুকে দিচ্ছে যারা বারবার, তাদের প্রত্যেককে জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।
এদিকে কিছু কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলেও স্পেশাল, কমিটেড (রি-এন্ট্রি) ও যাদের ভিসা ইতোমধ্যে হয়ে গেছে তারা কোরিয়া প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে।