আখি সীমা কাওসার, রোম, ইতালি প্রতিনিধিঃ চীনের উহান থেকে শুরু হওয়া, মহামারী করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় থমকে গেছে গোটা পৃথিবী । প্রায় দুই বছর হতে চলল মানুষ নীরব যুদ্ধ করছে এই ভাইরাসের সাথে। ভ্যাকসিনও আবিষ্কার হলো, অনেক দেশ মানুষের শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করছে, তারপরেও করোনা ভাইরাস দেশে দেশে শেষ করে দিচ্ছে লক্ষ কোটি প্রাণ। এই ভয়াল করোনার থাবা থেকে নিস্তার পাচ্ছে না ইতালিও। করোনার থাবায় বিধ্বস্ত ইতালি যেন ঘুরেই দাঁড়াতে পারছে না। কয়েক দফায় দেয়া হয়েছে লকডাউন। জরুরি সেবা ছাড়া বন্ধ রাখা হয়েছে ইতালির সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সিনেমা, থিয়েটার, পার্ক ইত্যাদি। বিভিন্ন শহর উপশহর গুলো করোনার প্রাদুর্ভাব কমবেশির উপর নির্ভর করে- তিনটি জরুরী জোনে বিভক্ত করেছে- রেড জোন, অরেঞ্জ জোন ও ইওলো জোনে ভাগ করা হয়েছে । এখন আস্তে আস্তে ইতালির পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ইতালির সরকার জনগণের ব্যবসা-বাণিজ্যের কথা চিন্তা করে আগামী ২৬ এপ্রিল থেকে ইতালির প্রায় অঞ্চল হলুদ জোনে ফিরে যাবে। এতে করে সাধারণ জনগণের মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে এসেছে। তবে এখনও সবার মধ্যে চরম ভয় বিরাজ করছে ।
আর ২৬ এপ্রিল, ২০২১ থেকেই শর্তসাপেক্ষে ইতালির রেস্তোরাঁ ও বারসহ সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। তবে, ভেতরে নয় খাবার পরিবেশন করতে হবে রেস্টুরেন্টের বাইরে চেয়ার-টেবিলে বসে। এ ছাড়া আগামী ১ জুন থেকে আর কোনো ধরনের বিধিনিষেধ থাকবে না বলে জানান দেশিটির প্রধানমন্ত্রী মারিও’র সরকার। স্থানীয়দের পাশাপাশি ইতালি সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরাও। তবে, ইউরোপের সঙ্গে বাংলাদেশের বিমান যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ছুটিতে গিয়ে দেশে আটকেপড়া প্রবাসী শ্রমিকদের অনেকেই চাকরি হারাবেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই ইতালি প্রবাসী বিভিন্ন সংগঠনগুলো মনে করে, ইতালি প্রবাসী যারা বাংলাদেশে টিকেট কেটে নির্দিষ্ট দিন তারিখ ফ্লাইট থাকা সত্বেও আটকা পড়েছে, তাদের ফ্লাইট যেন বাতিল না হয় । তারা যেন নির্দিষ্ট টাইমে তাদের বুকিংকৃত নির্দিষ্ট ফ্লাইটে টিকেটে নিজের কর্মস্থল ইতালিতে ফিরে আসতে পারে- সেদিক বিবেচনা করবার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ।
ইতালি প্রবাসী যারা বাংলাদেশে আটকা পড়েছে, তাদেরকে বিশেষ ব্যবস্থায় যেন গন্তব্যস্থল ইতালিতে ফিরে আসার ব্যবস্থা করে দেয়, সেই প্রত্যাশাই ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশিরা করে। বাংলাদেশে আটকে পড়া কয়েকজন ইতালি প্রবাসীর সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হয়েছে। অনেকেই ফ্যামিলি রেখে এসেছেন ইতালিতে এবং অনেকেই নির্দিষ্ট টাইমেই ইতালিতে ফেরত না গেলে কাজ হারাবে। অনেকের পাসপোর্ট এর মেয়াদ শেষ হবে, সেখানকার স্টে পারমিটের মেয়াদ শেষ হবে। এতে তারা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হবে । তাই তারা আশা প্রকাশ করেন , ইতালিতে রোম বাংলাদেশ দূতাবাস এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীর সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন ।