অসীম বিকাশ বড়ুয়া, সিউল, দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিনিধি: স্বপ্নের পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, আলোচনা সভা ও বিশেষ প্রার্থনার মধ্য দিয়ে আনন্দ উৎসব উদযাপন করেছে দক্ষিণ কোরিয়াস্হ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন। ২৬ জুন ২০২২ রবিবার বিকালে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের এক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডেভিড ইকরাম।
প্রথমে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত পাঠ করেন লিয়াকত হোসেন মিল্লাত, এরপর সবাই দাঁড়িয়ে সমস্বরে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার মাধ্যমে আলোচনা সভা শুরু হয়।
বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সৈকত ও সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান স্বপনের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মিঃ আন জে হান। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, দক্ষিণ কোরিয়া যুবলীগের সভাপতি মনোয়ার হোসেন মানিক, আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল হাসান, রবিউল ইসলাম, মামুন শেখ ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মিয়া মাসুদসহ অনেকে।
বক্তারা বলেন, ইতিহাসের সবথেকে বড় উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ ‘পদ্মা সেতু’ উদ্বোধন করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু আমাদের গৌরবের, আমাদের বহু প্রতীক্ষার, আমাদের আত্মমর্যাদার প্রতীক হিসেবে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের আত্মমর্যাদা বাড়িয়েছে এবং পদ্মা সেতু একটি ব্র্যান্ড হিসেবে শত শতাব্দীর সাক্ষী হয়ে থাকবে। এটা শুধু একটা সেতু নয়, বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার প্রতীক।
কোরিয়ান ব্যবসায়ী মি: আন জে হান বলেন, আমি ৫০ বার বাংলাদেশে গিয়েছি ব্যবসার কাজে। কিন্ত দক্ষিণ বঙ্গে যেতে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতো। যেমন, ফেরির জন্য চার ঘন্টা/ ছয় ঘন্টা এমনকি একদিন থেকেও ঢাকা ফেরত এসেছি! এখন বাংলাদেশে গিয়ে মাত্র ছয় মিনিটেই পদ্মা পার হতে পারবো এই জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। শেষ পর্যায়ে মোহাম্মাদ লিয়াকত হোসেন মিল্লাত কুইজ, বিভিন্ন গেম ও কৌতুকের আয়োজন করে সবাইকে আনন্দের খোরাক উপহার দেন। করোনা কালীন সময়ে অনেক দূর দূরান্ত থেকে প্রবাসীরা আনন্দ-উল্লাসের শামিল হওয়ায় সমাপনী বক্তব্যে সভাপতি ডেভিড ইকরাম সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও দেশজুড়ে বন্যা দুর্গতদের জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
প্রবাসীর রেমিটেন্সে সমৃদ্ধ হচ্ছে দেশের অর্থনীতি, তাই সকল উন্নয়নের অংশীদার প্রবাসীরাও। পদ্মা সেতুর আনন্দ-উল্লাসে অনুষ্ঠান মঞ্চে মেতে উঠেছি আমিও। যখন একজন কোরিয়ান ব্যবসায়ী আন জে হান বারবার বলছিল সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় ‘কংগ্রেচুলেশন পদ্মা ব্রিজ, আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি, আই লাভ বাংলাদেশ’। তিনি বলছিল গলা ফাটিয়ে বারংবার তখন আমি অনুষ্ঠান মঞ্চে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে সবার সাথে গাইতে থাকি, সূর্যদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি, ও আমার বাংলাদেশ, প্রিয় জন্মভূমি।
সভাশেষে সম্মিলিতভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে কেক কেটে মিষ্টি মুখ করে দেশীয় খাবার পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।