প্রবাস মেলা ডেস্ক:
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান (৭৪) আর নেই (ইন্নালিল্লাহি… রাজিউন)। ১ জুলাই, ২০২০ বুধবার বেলা ১২টির দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। বেশ কিছুদিন থেকেই বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। লতিফুর রহমান স্ত্রী, পুত্র, দুই কন্যাসহ আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, লতিফুর রহমানের মরদেহ আজ ঢাকায় আনা হবে। গুলশানের আজাদ মসজিদে বাদ এশা তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর রাতেই বনানী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।
জানা যায়, ১৯৪৫ সালে ভারতের জলপাইগুড়িতে জন্মগৃহণ করেন লতিফুর রহমান। পরবর্তীতে বাস করতেন পুরান ঢাকা গেন্ডারিয়ায়। পড়াশোনার শুরু সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলে। সেখান থেকে ১৯৫৬ সালে শিলংয়ের সেন্ট এডমন্ডস স্কুলে। তারপর কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। ১৯৬৫ সালে ঢাকায় ফিরে আসেন লতিফুর রহমান। ঢাকায় এসে ১৯৬৬ সালে ডব্লিউ রহমান জুট মিল ট্রেইনি হিসেবে কাজ শুরু করেন। দেড় বছর কাজ শেখার পর নির্বাহী হিসেবে যোগ দেন। এভাবে কাজ করেন ১৯৭১ সাল পর্যন্ত। লতিফুর রহমান ১৯৭২ সালে তিনি সবকিছু নতুন করে শুরু করেছিলেন প্রায় শূন্য হাতে। নিজের হাতে তৈরি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক গ্রুপ ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন। ব্যবসা ক্ষেত্রে নৈতিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১২ সালে বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার পান। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা দুটি প্রতিষ্ঠায় অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন তিনি।
সদ্য প্রয়াত এই বিজনেস টাইকুনের ট্রান্সকম গ্রুপের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক পণ্য, ওষুধ, সংবাদপত্র, চা শিল্প, বীমা ইত্যাদি। ট্রান্সকম গ্রুপের যাত্রা শুরু চা চাষের মাধ্যমে, যেটি এখন বাংলাদেশের অন্যতম একটি বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও লতিফুর রহমান নেসলে বাংলাদেশ, হোলসিম বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স ও ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান। তিনি লিন্ডে বাংলাদেশ এবং এনজিও ব্র্যাকের গভর্নিং বোর্ডের পরিচালক। তিনি আইসিসি বাংলাদেশের সহ-সভাপতি। বাংলাদেশের বাজারে আন্তর্জাতিক ফাস্টফুড চেইন পিৎজা হাট ও কিন্টাকি ফ্রায়েড চিকেন প্রচলনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিতি লাভ করেন লতিফুর রহমান।
উল্লেখ্য, লতিফুর রহমান এমন দিনে মারা গেলেন, যেদিন তার নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী। ফারাজ হোসেন ২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহত হন।