হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: ১৩ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘ সদরদপ্তরে সামাজিক উন্নয়ন কমিশনের চলতি ৫৭তম অধিবেশনের আওতায় ‘সামাজিক অন্তর্ভুক্তির অসমতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার কৌশল হিসাবে সামাজিক সুরক্ষা’ শীর্ষক একটি সাইড ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয় যেখানে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন কী-নোট স্পীকার হিসাবে অংশগ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রদূত মাসুদ তাঁর কী-নোট বক্তৃতায় সামাজিক সুরক্ষা খাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গৃহীত ও বাস্তবায়িত নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার সামাজিক নিরাপত্তা-জালের সবধরণের কর্মসূচি একত্রিত করে একটি ব্যাপক ভিত্তিক জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল প্রণয়ন করেছে। আমরা নিয়মিতভাবে ৬.৫ মিলিয়িন বয়স্ক নারী, পুরুষ, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা এবং প্রতিবন্ধী মানুষকে ভাতা দিয়ে যাচ্ছি’।
বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিকল্পনায় ‘সমবায়’ এর ব্যাপক ভূমিকার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, “স্বাধীনতার পর পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের উন্নয়ন ও এর অর্থনীতি পুনর্গঠনের লক্ষ্যে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে সমবায়কে অন্যতম একটি মাধ্যম হিসেবে নির্ধারণ করেন। তিনি সংবিধানের ১৩ নং অনুচ্ছেদে সমবায়ভিত্তিক মালিকানার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি কৃষি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, শিল্প উদ্যোগ এবং কৃষি ঋণসহ সকল সেক্টরে সমবায় ভিত্তিক উৎপাদন ও বণ্টন ব্যবস্থা সম্প্রসারিত করতে কাজ শুরু করেন। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সমবায় প্রতিষ্ঠান মিল্ক ভিটা এর উজ্জ্বল উদাহরণ’। স্থায়ী প্রতিনিধি আরও বলেন, “জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে শেখ হাসিনা সরকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার দরিদ্র মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য কৃষি, মৎস্য এবং তাঁত ও শিল্প সমবায় সমিতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন”।
বাংলাদেশকে নারীর ক্ষমতায়নের রোল মডেল আখ্যা দিয়ে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, “সরকার দেশের জনগণ বিশেষ করে নারীদের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়টির উপর জোর দিয়েছে যাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। তৈরি পোশাক শিল্পে নারীর কর্মসংস্থানের ফলে তৃণমূল পর্যায়ের নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটেছে। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের জনগণকে বিশেষ করে নারীদের আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় প্রবেশ নিশ্চিত করতে ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুযোগ করে দিয়েছে। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষ বিশেষ করে গ্রামীণ নারীরা উপকৃত ও স্বাবলম্বী হচ্ছে”।
অসমতা ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সম্পদ, প্রতিষ্ঠান, সক্ষমতা, প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন স্থায়ী প্রতিনিধি। এনজিও প্রতিনিধি মিজ উইনিফ্রেড ডোহেরটি অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভাগ (ডেসা) এর পরিচালক ড্যানিয়েল ব্যাস, প্রফেসর, ব্যারি হারমেন, নাইজেরিয়ার ওয়াল্ড ওয়াইড নেটওয়ার্ক এর প্রতিনিধি লোভেট্টি ইগো, ডেসা’র সমবায় বিষয়ক সমবায়কারী এন্ড্রু আলিমাদি এবং নাইজেরিয়ার ওয়াল্ড ওয়াইড নেটওয়ার্ক এর প্রতিনিধি ইফিও ফং অনুষ্ঠানটিতে প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।