হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: ১১ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘ এবং এর সদস্যরাষ্ট্রসমূহ, এনজিও ও সিভিল সোসাইটি যৌথভাবে ‘নারী ও বালিকাদের বিজ্ঞান বিষয়ক চতুর্থ আন্তর্জাতিক দিবস’ উদযাপন করে। ‘সামগ্রিক সবুজ প্রবৃদ্ধিতে নারী ও বালিকাদের জন্য বিনিয়োগের মূল্যায়ন’ বিষয়ক এই আন্তর্জাতিক দিবসের প্রথম প্যানেল আলোচনায় উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন যেখানে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নারী ও বালিকাদের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি করতে আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ কীভাবে নারীর ক্ষমতায়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে তাও তাঁর বক্তৃতায় তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ। বিশেষ করে বালিকাদের উচ্চ বিদ্যালয়ের ভর্তির ক্ষেত্রে সাফল্য এবং গত একদশক ধরে নারী ও বালিকারা ধারাবাহিকভাবে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যেভাবে অগ্রসর হয়েছে তা উল্লেখ করেন তিনি।
স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, “কলেজ পর্যায়ে মেয়েরা প্রায় সমপর্যায়ে উঠে এসেছে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে বিশেষ করে চিকিৎসা ও জীবন সম্বন্ধীয় বিজ্ঞানে তারা ছেলেদের থেকেও ভালো করছে। তবে এখনও গবেষণার ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য রয়েছে। এই অসমতা কাটিয়ে উঠতে আমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নীতি হালনাগাদ করেছি। এই নীতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের ব্যবহারিক ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, লিঙ্গ সমতা এবং টেকসই পরিবেশ নিশ্চিতের মাধ্যমে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রেও আমাদের এই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক নীতিমালা ভূমিকা রাখছে”। বিজ্ঞান ও গবেষণায় নারী ও বালিকাদের দৃশ্যমান ভূমিকার ক্ষেত্রে নানা সীমাবদ্ধতা ও বাঁধার বিষয়গুলো তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২২ ডিসেম্বর সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত রেজ্যুলেশন ৭০/২১২ অনুযায়ী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ প্রতিবছর ১১ ফেব্রুয়ারিকে নারী ও বালিকাদের বিজ্ঞান বিষয়ক আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। দিবসটি ২০১৬ সাল থেকে পালিত হয়ে আসছে। প্রতিবছর দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে প্রিন্সেস নিসরিন এল-হাসিমিতের নেতৃত্বে ‘দ্যা রয়্যাল একাডেমি অব সায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল ট্রাস্ট (র্যাসিট), জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্র ও অন্যান্য সংস্থাকে নিয়ে একটি ফোরাম গঠন করে আসছে। গত বছর নারী ও বালিকাদের বিজ্ঞান বিষয়ক তৃতীয় আন্তর্জাতিক দিবস উদ্্যাপন শেষে গৃহীত ‘শান্তি ও উন্নয়নের জন্য বিজ্ঞান বিষয়ে সমতা ও সমমর্যাদা’ শীর্ষক চূড়ান্ত দলিলে ২৩টি সদস্য রাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশও যোগদান করে।
এ বছর বাংলাদেশ, শ্লোভাক রিপাবলিক, হাঙ্গেরি ও পোল্যান্ড এর সাথে যৌথভাবে এই চতুর্থ আন্তর্জাতিক দিবসটি উদযাপন করছে যেখানে সহযোগিতা করছে র্যাসিট, আন্্কটাড এবং আইটিইউ। আফ্রিকান ইউনিয়ন, ইন্টারন্যাশনাল ফাঙ্কফোনি সংস্থা, আইএলও, ডব্লিউএইচও, ডব্লিউআইপিও এবং ইউনিটার এর মত সংস্থার পাশাপাশি জাতিসংঘে নিযুক্ত সাইপ্রাস, গুয়েতেমালা, হাইতি, কেনিয়া, পোল্যান্ড, সানম্যারিনো, সেইন্ট ভিনসেন্ট, ফিলিপাইন, টোঙ্গা, ভিয়েতনাম, উরুগুয়ে এবং জাম্বিয়া মিশনসমূহ এর সহ-আয়োজক। মাল্টার ‘ইউরোপ ও সমতা বিষয়ক’ মন্ত্রী ড. হেলেনা ড্যাল্লি অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করেন।
দুইদিন ব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব ও সাধারণ পরিষদের সভাপতি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন।