হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: বৈশ্বিক মানবিক চাহিদা (global humanitarian appeal) অনুযায়ী ২০১৭ সালে বৈশ্বিক সঙ্কট ব্যবস্থাপনার মানবিক ও অর্থনৈতিক ব্যয় ২৩.৫ বিলিয়নে পৌঁছেছে, যা ছিল সর্বোচ্চ। আর মিয়ানমারের সাথে আমাদের সীমান্ত এলাকায় এ যাবত কালের মধ্যে সংঘটিত সর্বাপেক্ষা বড় মানবিক বিপর্যয় অর্থাৎ প্রায় এক মিলিয়ন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে মানবিক আশ্রয়দানের কারণে মানবিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত ক্ষেত্রে ভয়াবাহ বিপর্যয়ের পাশাপাশি এই ব্যয় আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে” জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম (UN High Level Forum on the Culture of Peace) -এর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা বলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম এমপি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ সবময়ই জাতিসংঘের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ও ‘টেকসই শান্তি’ বিষয়ক পদক্ষেপে নিবেদিত রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে অর্থাৎ এবছর এপ্রিলে আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ‘শান্তি বিনির্মাণ ও টেকসই শান্তি’ বিষয়ক জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের সভায় বাংলাদেশ ডেলিগেশনের নেতৃত্ব দেন। এর আগে মার্চে লিথুনিয়াকে সাথে নিয়ে আমরা একই বিষয়ে সাধারণ পরিষদের রেজুলেশন কো-ফ্যাসিলেটেট করেছি”। পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তির সংস্কৃতির অত্যুৎসাহী একজন প্রবক্তা হিসেবে সদ্য প্রয়াত জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের অবদান গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ইউনেস্কোর শুভেচ্ছা দূত ড. রিগোবার্তা মেনচু তুম (Dr. Rigoberta Menchú Tum)। স্বাগত ভাষণ দেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মিরোস্লাভ লাইচ্যাক (Miroslav Lajčák)। জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে বক্তব্য রাখেন তাঁর শেফ দ্যা কেবিনেট মারিয়া লুইজা রিবেইরো ভিয়োট্টি (Ms. Maria Lui“a Ribeiro Viotti )।
শান্তির সংস্কৃতি বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের এই ফোরামের দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকালে ‘শান্তির সংস্কৃতি: টেকসই শান্তির নিশ্চিত পথ (The Culture of Peace: A Credible Pathway to Sustain Peace)’ শিরোনামে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মিজ্ রোজম্যারি এ ডিকারলো (Rosemary A. DiCarlo ), মেক্সিকোর স্থায়ী প্রতিনিধি জুয়ান জোসে গোমেজ ক্যামাচো (Juan José Gómey Camacho), কেনিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি লাজারুস ওমবাই অ্যামায়ও (Layarus Ombai Amayo), প্রখ্যাত শান্তি বিষয়ক শিক্ষাবিদ মিজ্ মারিয়ে পাওলি রোওডিল (Marie Paule Roudil) এবং অধ্যাপক মিজ্ র্যাচেল অ্যালেন (Rachel Allen)। প্যানেল আলোচনাটিতে সিভিল সোসাইটির ব্যাপক উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। প্যানেল আলোচনা অংশের মডারেটর ছিলেন জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত আনোয়ারুল করিম চৌধুরী।
দিনব্যাপী আয়োজিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মিরোস্লাভ লাইচ্যাক। তাঁর পক্ষ থেকে এই সাধারণ আলোচনার উপর একটি সার-সংক্ষেপও তৈরি করা হবে।