আবু জাফর মাহমুদ, নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র থেকে:
পশ্চিম তীরের দখলকৃত অংশ ইজরাইলের সাথে অঙ্গিভূত করার বিরুদ্ধে জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আব্দুল্যাহ হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন দখলদার রাষ্ট্র ইজরাইলকে। তার হুমকির পর দখলদার ইসরাইলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ইসরাইলের জাতীয় টিভি চ্যানেল ‘কান’ এক প্রতিবেদনে বলেছে, জর্ডানের রাজা যে সুরে কথা বলেছেন, তা উদ্বেগজনক। জর্ডানের রাজার হুমকিকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সম্প্রতি জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইসরাইল পশ্চিম তীরের দখলকৃত অংশকে তার নিজের ভূখণ্ড হিসেবে ঘোষণা করলে বড় ধরণের সংঘাত শুরু হতে পারে। জর্ডানের সঙ্গেই এ সংঘাত হতে পারে বলে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি স্বাধীন ফিলিস্তিন গড়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।জর্ডানের রাজা বলেন, স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠাই সর্বোত্তম পথ।
ইসরাইলি টিভি চ্যানেল বলেছে, পশ্চিম তীরকে ইসরাইলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরিকল্পনা উত্থাপিত হওয়ার পর থেকেই জর্ডানের রাজা গরম সুরে কথা বলছেন। রাজার অবস্থানের প্রতি সেদেশের জনগণেরও সমর্থন রয়েছে। এর আগে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আইমান আল সাফাদি বলেছেন, ইসরাইল পশ্চিম তীরকে নিজের ভূখণ্ড হিসেবে ঘোষণা করলে তা হবে বিপর্যয়কর। এধরণের পদক্ষেপের ফলে সরাসরি আন্তর্জাতিক আইনও লঙ্ঘিত হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। দখলদার ইসরাইল পশ্চিম তীরের দখলকৃত অংশকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের অবিচ্ছেদ্য ভূখণ্ড হিসেবে ঘোষণার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তবে ফিলিস্তিনের স্বশাসন কর্তৃপক্ষসহ সব ফিলিস্তিনি দল ও সংগঠন এধরণের পরিকল্পনার পরিণতির বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। চলতি বছর বিশ্ব কুদস দিবসে বিশ্বব্যাপী ফিলিস্তিনি পতাকা উত্তোলনের যে অভাবনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন নানা শ্রেণীপেশার মানুষ। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বার্তা পাঠিয়ে এসমর্থন জানানোর পাশাপাশি ইহুদিবাদী ইসরাইলের আগ্রাসনের মোকাবিলায় প্রতিরোধ সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম খোমেনী (রহ.) রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে বিশ্ব কুদস দিবস হিসেবে পালনের আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭৯ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী এ দিবস পালন করা হয়।ইহুদিদের কট্টর চক্রের কবল থেকে মুসলমানদের প্রথম ক্বেবলার শহর আল-কুদস বা বায়তুল মুকাদ্দাসকে মুক্ত করার লক্ষ্যে এদিবস পালন করার আহ্বান জানান ইমাম খোমেনী। প্রতি বছর ইরানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কুদস দিবসে ব্যাপক ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।অন্যান্য বারের চেয়ে এবার কুদস দিবস পালনে কেবল পশ্চিমতীরকে ইজরাইলের অংশ করে নেয়ার উদ্যোগের বিরোধীতা, বাইতুল মোকাদ্দেশ মুক্ত করা এবং স্বাধীন প্যালেষ্টাইন প্রতিষ্ঠার স্বার্থকে ঘিরে ইজরাইল বনাম ফিলিস্তিন বিপ্লবের ধারা মধ্যপ্রাচ্যে শেষ লড়াই বলে বাড়ছে তেজ। তবে মধ্যপ্রাচ্যে মুসলমান রাজা বাদশাহরা আমেরিকা ও ইসরাইলের প্রভাবের বাহিরে করটুকু অবস্থান নিয়ে থাকবে তা বলা মুস্কিল। তবে ভবিষ্যতে এই সন্দেহ দূরিভূত হবে। আরো পরিস্কার হবে পরিস্থিতি। দুনিয়ার মালিক নিজেই নিশ্চিত করে জানিয়েছেন তার সর্বশেষ গাইডবুকে। তার সর্বশেষ রাসুল হযরত মুহাম্মদ (দঃ) তা আল্লাহর বান্দাদের পথ নির্দেশনার জন্যে বর্ণনাও করে গেছেন।