প্রবাস মেলা ডেস্ক: আফ্রিকার দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে এমপক্স ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। আফ্রিকায় এ পর্যন্ত পাঁচশ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ভাইরাসটি অন্য মহাদেশেও ছড়িয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। যার ফলে এখন বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বৃহস্পতিবার পৃথক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি ও ডয়চে ভেলে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মূলত কঙ্গো থেকেই প্রতিবেশী দেশগুলোতে এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে। চলতি বছরের শুরু থেকে কঙ্গোতে ১৩ হাজার ৭০০টিরও বেশি এমপক্স ভাইরাসের আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে, এদের মধ্যে কমপক্ষে ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিবিসি বলছে, ভাইরাসটির নতুন একটি ধরণ মধ্য এবং পূর্ব আফ্রিকার বিভিন্ন অংশে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে এবং নতুন এই ধরণের আক্রমণে উচ্চ মৃত্যুর হার নিয়ে উদ্বিগ্ন বিজ্ঞানীরা।
অন্যদিকে ডয়চে ভেলের তথ্যমতে, গতবছরের তুলনায় চলতি বছরের এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৬০ গুণ বেড়েছে, মৃত্যুর সংখ্যা ১৯ শতাংশ বেড়েছে। ভাইরাসটির নতুন প্রজাতি কঙ্গোতে প্রথম পাওয়া গেলেও তা দ্রুত বুরুন্ডি, সোন্ট্রাল অফ্রিকান রিপাবলিক, কেনিয়ার মতো দেশে ছড়িয়েছে।
এ পর্যন্ত ১৭ হাজার মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এবং পাঁচশ জন মারা গেছেন। মঙ্গলবার আফ্রিকান সেন্টার ফর ডিসিস কন্ট্রোল (আফ্রিকান সিডিসি) ও আফ্রিকান ইউনিয়ন হেলথ অথরিটি এমপক্সকে নিয়ে জরুরি অবস্থার ঘোষণা দেয়। তারপর বিশ্ব স্বাস্থসংস্থাও একই ঘোষণা করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা জানিয়েছে, তারা সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা জারি করেছে। এই রোগের প্রাদুর্ভাব যাতে বন্ধ করা যায়, এই রোগ নিয়ে যাতে আরো গবেষণা হয় এবং আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য-খাতে যাতে আরো অর্থ দেয়া হয়, সেজন্যই তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস বলেন, এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে, এই রোগ থামাতে গেলে আন্তর্জাতিক স্তরে সচেতন হতে হবে এবং সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে হবে।
সাধারণত, কারো এমপক্স হলে তার সংস্পর্শে আসা মানুষদের তা হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। তাতে শরীরে জ্বরের উপসর্গ থাকে। তবে জ্বর খুব বেশি হয় না। আর চামড়ায় পুঁজ-ভর্তি ক্ষত দেখা দেয়। এই রোগ প্রাণঘাতীও হতে পারে। এই ভাইরাসে আক্রান্তদের ১০০ জনের মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়ে থাকে।
আফ্রিকান সিডিসি-র প্রধান জিন কাসেয়া মঙ্গলবার বলেন, আফ্রিকা মহাদেশের জন্য অবিলম্বে এক কোটি ভ্য়াকসিন দরকার। কিন্তু তাদের কাছে দুই লাখ ভ্যাকসিন আছে। তিনি জানিয়েছেন, দ্রুত ভ্যাকসিন পাওয়ার চেষ্টা চলছে। এর আগে ২০২২ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা প্রথমে এমপক্স নিয়ে আবিশ্ব জরুরি অবস্থা জারি করে। তখন ৭০টিরও বেশি দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়েছিল। তখন অবশ্য মাত্র এক শতাংশ মানুষ মারা গেছিলেন।
এবছর কঙ্গোয় এমপক্স আক্রান্তের মধ্যে ৭০ শতাংশের বয়স ১৫ বছরের নিচে। মৃতদের মধ্যে ৮৫ শতাংশই কম বয়সি।