প্রবাস মেলা ডেস্ক: পতেঙ্গার লালদিয়ার চরে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রস্তাবিত টার্মিনালে নেদারল্যান্ডসের কোম্পানি এপিএম টার্মিনালস ৮০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। বৃহস্পতিবার লালদিয়া প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
আশিক চৌধুরী বলেন, “এপিএমের যে হেডকোয়ার্টার নেদারল্যান্ডসে, ওখানে গিয়েছিলাম গত পরশু। উনারা বিভিন্ন দেশে পোর্ট অপারেট করেন। মনে হয়, ওয়ার্ল্ডের সবচেয়ে ওয়ান অব দি বিগেস্ট পোর্ট অপারেটর।
“উই আর বিকামিং পার্ট অব হিস্ট্রি। সো, আমাদের একটা হিস্ট্রি তৈরি করার সুযোগ আছে।”
তিনি বলেন, “আমার যেটা প্রাইমারি ম্যান্ডেট, সেটা হচ্ছে ইনভেস্টমেন্ট আর হচ্ছে জব ক্রিয়েশন- বাংলাদেশের জন্য। আমরা সবসময় বলি যে, বাংলাদেশের কিন্তু প্রায় ৫০ শতাংশ পপুলেশন হচ্ছে গিয়ে ২৫ বছরের নিচে বয়স। এটা এত ইউনিক, আপনি পৃথিবীর আর কোনো দেশে এই পপুলেশন পাবেন না।
“তো তাদের ভবিষ্যৎ, তাদের ভবিষ্যৎ যে ভালো হবে, সেটাকে এনশিউর করার কিন্তু একমাত্র উপায় হচ্ছে- আমাদের দেশকে একটা ম্যানুফ্যাকচারিং হাব করা এবং সেটার জন্য পোর্ট ক্যাপাসিটি ইজ ভেরি ইম্পর্টেন্ট।”
বিশ্বের অন্যতম বন্দর অপারেটর এপিএমের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, “আমার সাথে ওনাদের যে কথা হয়েছে, সেখানে প্রাইমারি যেটা অ্যাসেসমেন্ট, সেটা হচ্ছে যে- এখানে এই পোর্টটা করতে এটা একটা অভিয়াসলি স্টেট অব দি আর্ট এবং গ্রিন একটা পোর্ট হবে।
“এই গ্রিন পোর্টটা করতে ওনাদের রাফলি ৮০০ মিলিয়ন ডলারের মতো লাগবে। এই পুরাটাই এফডিআই (প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ) হিসেবে বাংলাদেশে আসবে, এখানে কিন্তু সরকার এক টাকাও দিচ্ছে না এবং পুরাটাই ওনারা বিদেশ থেকে ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফডিআই) হিসেবে আনবে।”
বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, “আপনারা জানেন যে, বাংলাদেশের এফডিআই নাম্বারটা কিন্তু খুবই ছোট। আমাদের যেটা জেনুইন ট্রু এফডিআই যেটাকে আমরা বলি যে, ইকুইটি হিসেবে যে নাম্বারটা ঢোকে, সেই নাম্বারটা কিন্তু প্রতি বছরই আমাদের ৪০০, ৫০০, ৬০০, ৭০০ মিলিয়নের বেশি আসে না।
“তো এই একটা প্রজেক্টে যদি আমাদের ৮০০ মিলিয়ন ডলারের এফডিআই আসে এবং এপিএমের মতো একটা ভালো কোম্পানি থাকে, সেটা আমাদের দেশের ইকোনমির জন্য এবং ওভারঅল আমাদের ফিন্যান্সিয়াল হেলথের জন্য- ইটস ভেরি ভেরি ক্রুশাল। সো, আমরা এই জন্য সরকার থেকে চেষ্টা করছি যে, আমাদের লং টার্ম ভিশন বা অ্যাম্বিশনের সাথে এটা অ্যালাইনড।”
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক বলেন, “অ্যাট দা সেইম টাইম, এই কোম্পানিটা গ্লোবালি খুবই ওয়েল রেপুটেড। তাদের অপারেশনাল এক্সপেরিয়েন্সও খুব ভালো, তারা ওই নলেজটা নিয়ে আসবে। এর মাধ্যমে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
“এবং অ্যাট দা সেইম টাইম আমাদের যে ওভারঅল এফডিআই নাম্বারটা, সেই নাম্বারটাতে একটা সিগনিফিকেন্ট স্পাইক হবে।”
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) সক্ষমতা বাড়ানো, সেখানে বিদেশি অপারেটর নিয়োগ এবং এনসিটির পাশেই থাকা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঈসা খাঁ ঘাঁটির নিরাপত্তা বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, “আমাদের লং টার্ম অ্যাম্বিশন যেটা, বাংলাদেশকে আমরা গ্লোবাল ফ্যাক্টরি বানাতে চাই। সেটার সবচেয়ে প্রাইমারি ফ্যাক্টর কিন্তু হচ্ছে বা সবচেয়ে বড় ইনগ্রেডিয়েন্ট হচ্ছে পোর্ট ক্যাপাসিটি। পোর্ট ক্যাপাসিটি না থাকলে আপনি কিছু করতে পারবেন না। এটা তো আমরা সবাই জেনারেলি এগ্রিড।
“এবং যেহেতু আমাদের পোর্ট ক্যাপাসিটি লিমিটেড, আমাদের পোর্ট ক্যাপাসিটি কিন্তু শুনে মনে হয় যে আমরা ছয়গুণ করে ফেলব। বাট সেই ছয়গুণ করার পরেও আমরা ভিয়েতনামের ধারের কাছেও যাব না। ভিয়েতনামের টোটাল ৫৪ পোর্টস। আমাদের এখানে হবে-হচ্ছে গিয়ে পাঁচটা বা ছয়টা পোর্ট, রাইট? মাতারবাড়ী ধরে যদি আপনি হিসাব করেন, মোংলা ধরে হিসাব করেন। সো, পোর্ট ক্যাপাসিটি আমাদের স্টিল লিমিটেড।”
তিনি বলেন, “এই সীমিত পোর্ট ক্যাপাসিটিতে আমাদেরকে মোস্ট এফিসিয়েন্ট এবং বেস্ট ওয়েতে পোর্ট ম্যানেজ করতে হবে। তো ওয়ার্ল্ডের যারা টপ পোর্ট অপারেটর, তাদেরকে আনার আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, যেহেতু আমাদের ল্যান্ড লিমিটেড, আমাদের ক্যাপাসিটি লিমিটেড, সেই লিমিটেড ক্যাপাসিটিকে যাতে আমরা বেস্ট ইউটিলাইজ করতে পারি।
“যারা এক্সপার্ট, তাদেরকে দিয়ে চালাতে দিলে, আই অ্যাম প্রিটি কনফিডেন্ট যে এখানে প্রোডাক্টিভিটি এফিসিয়েন্সি বাড়ানো সম্ভব। আর নিরাপত্তার ব্যাপারে আপনি যেটা বললেন, দেখেন আমাদের নেইবারিং কান্ট্রি- ইন্ডিয়া, পাকিস্তানের কথা যদি বলি। এই সবাই অনেকেই ডিপি ওয়ার্ল্ড নিয়ে অনেক কথা বলে। ডিপি ওয়ার্ল্ড ইন্ডিয়াতে পাঁচটা পোর্ট চালায়, পাকিস্তানে একটা পোর্ট চালায়। আরো তারা ৬০-৭০টা দেশে পোর্ট চালায়।”
আশিক বলেন, “ইনফ্যাক্ট, মেজরিটি অব দ্য গ্লোবাল পোর্ট অপারেটরস, তারা তাদের নিজেদের দেশে হয়তো একটা-দুইটা পোর্ট চালায়। কিন্তু গ্লোবালি তারা আরো ৬০-৭০টা দেশে পোর্ট চালায়।
“তো কারও সিকিউরিটি কনসার্ন হয় না, আমাদের এখানে সিকিউরিটি কনসার্ন হয়ে যায়। দ্যাটস আনফরচুনেট।”
নৌঘাঁটির নিরাপত্তা প্রসঙ্গে বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, “আই হ্যাভ এ লট অব ট্রাস্ট ইন বাংলাদেশ নেভি। ওনারা জানেন যে, আমাদের যে নেভাল সিকিউরিটি বলেন বা মেরিটাইম সিকিউরিটি, ওটা কীভাবে ওনাদেরকে হ্যান্ডেল করতে হবে। ওনারা তো আমাদের সমুদ্র পাহারা দিচ্ছেন এবং খুব ভালোভাবেই দিচ্ছেন এবং খুবই লিমিটেড নাম্বার অব ভেসেলস দিয়ে করছেন।
“সো, আই অ্যাম প্রিটি সিউর যে দেশের ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট, কমার্শিয়াল ইন্টারেস্ট, ওনাদের পক্ষে ম্যানেজ করা খুবই সম্ভব হবে এবং ওনারা ওটা খুব ভালোভাবে করতে পারবেন। সো- আমি এটা নিয়ে একেবারে ভয় পাই না।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।