প্রবাস মেলা ডেস্ক: রাখাইন রাজ্যের বাসিন্দা রোহিঙ্গাদের ওপর আজ থেকে সাত বছর আগে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ ও জাতিগত নিধন চালিয়েছে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা বাহিনী। বিদ্রোহী গোষ্ঠির বিরামহীন হামলার মুখে বিপর্যস্ত জান্তা সরকারই এবার বিদ্রোহ দমনে সেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সহায়তা চাইছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জান্তা বাহিনী ইতোমধ্যে শতাধিক রোহিঙ্গাকে বাহিনীতে ভর্তি করেছে। তাদের একজন মোহাম্মদ (নিরাপত্তার স্বার্থে প্রকৃত নাম প্রকাশ করা হয়নি)। তিনি বলেন, জান্তা বাহিনীকে তিনি সব সময়ই ভয় করেছেন। কিন্তু তারপরও যেতে হয়েছে। কারণ, মোহাম্মদ যদি সেনাবাহিনী ভর্তি না হন, তবে তার পরিবারের ক্ষতি করা হবে।
৩১ বছর বয়সী মোহাম্মদের মতো আরও শতাধিক তরুণ-যুবককে জোর করে জান্তা বাহিনীতে ভর্তি করানো হয়েছে ভয়ভীতি দেখিয়ে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আরও একাধিক রোহিঙ্গা জানিয়েছেন, রাখাইনের রাজধানী সিতওয়ের কাছের যে আশ্রয় শিবিরে তারা থাকেন, সেখানে প্রায় প্রতিদিন সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা এসে বাহিনীতে ভর্তি হওয়ার জন্য ভয় দেখিয়ে যায়।
চরম পরিতাপের বিষয় হলো—যে রোহিঙ্গাদের জোর করে জান্তা বাহিনীতে ঢোকানো হচ্ছে, মিয়ানমারের সংবিধানে তারা স্থানীয় নৃগোষ্ঠী হিসেবেই বিবেচিত না। তাদের নাগরিকত্বই অস্বীকার করা হয় এখনো দেশটিতে। এমনকি, দেশের ভেতরেও তাদের চলাচল সীমাবদ্ধ, যেতে দেয়া হয় না দেশের বাইরেও।
রোহিঙ্গাদের ওপর এই নির্যাতন নতুন কোনো ঘটনা নয়। ২০১২ সালে রোহিঙ্গাদের জোর করে বিভিন্ন নোংরা ক্যাম্পে থাকতে বাধ্য করে। পাঁচ বছর পর, ২০১৭ সালে জান্তা বাহিনীর ‘জাতিগত নিধন অভিযানের’ কারণে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সে সময় রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর ব্যাপক আকারে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। মিয়ানমারে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার কার্যক্রম চলছে।