কোলকাতা, ভারত প্রতিনিধি: ফুল ফুটুক আর না ফুটুক, বসন্তের আগমনে যেমন কোন বাধা থাকে না, তেমনই, বর্ষার অপেক্ষা না করেই, ভরা বসন্তে কলকাতায় উন্মেষ ঘটলো আনকোরা নতুন এক ভারতীয় সাংস্কৃতিক সংস্থা ‘পেখম’-এর। মাত্র সাতদিনের ব্যবধানে গত ২ মার্চ ২০১৯ পাটুলী মিউজিক ক্যাফেতে ‘বসন্ত আলাপ’ এবং ১ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমী সভাগৃহে ‘সারস্বত সন্ধ্যা’ নামাঙ্কিত দুটি সফল নান্দনিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করলো ‘পেখম’। দর্শকপূর্ণ দুটি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই শ্রোতৃম-লীর উদ্দেশ্যে ‘পেখম’-এর সাংগঠনিক ভাবনা এবং আগামী নানাবিধ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন সম্পাদক সুপরিচিত বাচিককর্মী ও চিত্রশিল্পী শ্রী প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য। সারা ভারতবর্ষের বিভিন্ন ভাষার সকল সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন গড়ে তোলাই ‘পেখম’- এর মূল লক্ষ্য। সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের মাধ্যমে ঐক্যের বার্তা দিতে চায় এই নবজাতক সংগঠন। ‘বসন্ত আলাপ’ ও ‘সারস্বত সন্ধ্যা’ জমে উঠেছিল নানা ধারার বিশিষ্ট শিল্পীদের আন্তরিক উপস্থাপনায়। এই দুই সন্ধ্যায় ‘পেখম’ এর নানা রং- এর পুচ্ছ হয়ে উঠে রং মিলিয়েছিলেন কবি জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়, কবি প্রসূন ভৌমিক, কবি স্বপ্নশ্রী ভট্টাচার্য, কবি শ্রীপর্ণা বিশ্বাস, কবি মধুমিতা রায় প্রমুখ। আবৃত্তি ও কন্ঠ-নাটক পরিবেশনে ছিলেন বিমল কোনার, দীপন সেনগুপ্ত, সাদেকুল করীম, তাপস চৌধুরী, সোমা আইচ, অসীম চক্রবর্তী, মিঠু ঘোষ, তনুকা চৌধুরী, জ্যোতির্ময়
চক্রবর্তী, চৈতালী গোস্বামী, অরিজিত দাস, অনুপম ঘোষ, প্রিয়াঙ্কা সেনগুপ্ত, সৌভিক সেন, সুস্মিতা রায়, রমেন চ্যাটার্জী, জয়ন্ত চক্রবর্তী, শ্রাবণী চক্রবর্তী, সুস্মিতা মল্লিক, মৌসুমী মুখার্জী পাল, মৈত্রেয়ী রায়, দীপঙ্কর সেন, শম্পা দত্ত, দেবাশীষ মৌলিক, শ্যামলী রায়ের মতো স্বনামধন্য বাচিকশিল্পী, আবৃত্তিশিল্পী এবং নাট্যকাররা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন বর্ষীয়ান নাট্যকার শ্রীমতি বনানী মুখোপাধ্যায়। তাঁর অসাধারণ কন্ঠ-নাটক পরিবেশনা দর্শকের মুগ্ধতা প্রদান করেছে। অনুষ্ঠানের ঔজ্জ্বল্য বাড়িয়ে উপস্থিত ছিল দূর্গাপুর শ্রুতিরঙ্গম, আবৃত্তি শিল্পী সংস্থা, মোহনা এবং মোহনা কচি সংসদের মতো পেশাদার দল। মন ভরানো সঙ্গীত পরিবেশন করেছিলেন স্বনামধন্য পুরাতনী বাংলা গানের শিল্পী শ্রী অরিন্দম মুখার্জী। গল্পপাঠে শ্রোতৃম-লীর মন জয় করেন প্রশান্ত বসু। কাব্যগীতিতে ব্যতিক্রমী নিদর্শন রাখলেন মৌসুমী হোসেন। সঞ্চালনায় ছিলেন এমিলি ব্যানার্জী।
দুটি অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিকল্পনা, সুষ্ঠু পরিচালনা এবং চিত্তাকর্ষক মনোগ্রাহী সঞ্চালনায় সকলের হৃদয় জয় করেছেন প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য। দুটি অনুষ্ঠানেই সুমধুর আবহ সৃষ্টি ও প্রক্ষেপণে ছিলেন আলোকেশ দে সরকার (সানি)। আগামী দিনে সুস্থ সংস্কৃতির প্রচার, প্রসার অব্যাহত থাকুক। ভারতীয় সংস্কৃতির উন্নতির লক্ষ্যে সুগম হোক ‘পেখম’- এর জয়যাত্রা।