অসীম বিকাশ বড়ুয়া, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে: উদ্যোক্তা সবাই হতে না পারলেও যাদের স্বপ্ন ও লক্ষ্যে আছে তাদেরকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার মানসে ‘কিভাবে উদ্যোক্তা হবো এবং উদ্যোক্তা হওয়ার সহজ উপায়’ নিয়ে বিশ্বের বাংলাদেশি প্রবাসীদের মধ্যে সর্বপ্রথম দঃ কোরিয়ার প্রবাসীদের জন্য আয়োজিত উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন হয়েছে। সিউলের বাংলাদেশ দূতাবাস ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির যৌথ উদ্যোগে এই প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা হয়েছে।
এ উপলক্ষ্যে দঃ কোরিয়ায় ৭ মার্চ ২০২১, রবিবার বিকেলে জুম প্লাটফর্মের মাধ্যেমে সমাপনী ক্লাসে উদ্যোক্তা কোর্সের মূল্যায়ন ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শুরু থেকে উক্ত উদ্যোক্তা কোর্সের প্রশিক্ষণ দেন বাংলাদেশের উদ্যোক্তা উন্নয়নের স্বনামধন্য ও প্রথিতযশা প্রশিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের এসোসিয়েট প্রফেসর ড. রাফিউদ্দিন আহমেদ ও ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. মো: মোহন উদ্দিন।
আলোচনা সভায় উদ্যোক্তা হতে প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রফেসর ড. রাফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা এত বেশি ট্রেনিংপ্রাপ্ত নয় তাই অন্য দেশের তুলনায় ডেভেলপ করে কম। যে কোন ব্যবসায় একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য না আনতে পারলে উদ্যোক্তা হওয়া যাবেনা। উদ্যোক্তা মানে শূণ্যস্থান পূরণ করা। কোর্সে অংশগ্রহণকারী প্রবাসীদের উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, মাইন্ড সেটআপ করা মানে অর্ধেক কাজ শেষ। কাজ করতে গেলে ভুল হবে তাই ভয় না পেয়ে কাজ শুরু করুন। আপনারা বিদেশে থাকা অবস্থায় দেশে এখনি শুরু করুন যে কোন উদ্যোগ এবং হয়ে যান ছোট খাট উদ্যোক্তা। আর এখন না করে পরে করবেন ভাবলে কোনদিনই পারবেন না।
একজন ব্যবসায়ীর দোকান বন্ধ থাকলে আয়ও বন্ধ কিন্তু একজন উদ্যোক্তা ঘুমালেও তার আয় বন্ধ হয়না অর্থাৎ ব্যবসায়ী হওয়া সহজ উদ্যোক্তা হওয়া কঠিন, উদ্যোক্তা সবাই হতে পারেনা এই কঠিন জিনিসটাকে সহজ করে বুঝিয়ে দিয়ে প্রফেসর ড. মো: মোহন উদ্দিন বলেন, বিদেশের মাটিতে তোমরা আমার প্রথম স্টুডেন্ট এবং দঃ কোরিয়ার এই প্রোগ্রাম বিশ্বের বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রথম উদ্যোগ যা এখন অন্য দেশের প্রবাসী বাংলাদেশিরা এটা ফলো করছে।
উক্ত কোর্সে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে থেকে বক্তব্য রাখেন, কাউন্সিলর শেখ নিজামুল হক, দঃ কোরিয়া প্রবাসী সাংবাদিক অসীম বিকাশ বড়ুয়া, বিএসকে সভাপতি কাজী শাহ আলম, পিএইচডি গবেষক রবিউল কবির, এস এম মনির হোসেন, নূর আলম। বক্তারা বলেন, প্রবাসকালীন সময়ে প্রবাসী বান্ধব এই উদ্যোক্তা কোর্স আমাদের জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার এবং এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণের মাধ্যেমে আমাদের স্বপ্ন, মনোবল, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাওয়ায় আনন্দানুভূতি অনুভব করছি। এ জন্য অংশগ্রহণকারী দঃ কোরিয়ার প্রবাসীরা দঃ কোরিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম, প্রথম সচিব (শ্রম) মকিমা বেগম ও ঢাকা চেম্বার অফ কমার্সের সেক্রেটারি মো: জয়নাল আবেদীনকে ধন্যবাদ জানান।
দেশে গিয়ে কোন ধরণের উদ্যোক্তা হবেন এ ধরণের প্রশ্নোত্তর পর্বে হাইড্রোপনিকের ব্যবসা করার বক্তব্য তুলে ধরেন সজল মোহন, ভাম্যমাণ ব্যবসায়ীক লাইব্রেরি করার পরিকল্পনা বলেন মুরসালিন শেখ, হাতমোজার ফ্যাক্টরী করার কথা বলেন নাজমুল হোসাইন এবং শংকর বিশ্বাস বলেন, আমি দেশে অনলাইন ও অফলাইনে হস্তশিল্পের বিশাল প্লাটফর্ম তৈরী করতে চাই।
আলোচনা সভায় ঢাকা চেম্বার অফ কমার্সের কোর্স কো-অর্ডিনেটর তামান্না সুলতানা বলেন, ভবিষ্যতে উদ্যোক্তা বিষয়ক আরও ট্রেনিং করতে চাইলে দেশে যোগাযোগ করবেন এবং আমরা অংশগ্রহণকারীদের জন্য সার্টিফিকেট খুব শীঘ্রই কোরিয়াতে পাঠিয়ে দেব।
দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব মিসপি সরেন বলেন, উদ্যোক্তা বিষয়ক কোন ধরণের সাহায্যের প্রয়োজন হলে দূতাবাসে যোগাযোগ করবেন এবং এই কোর্সে পরবর্তীতে অংশগ্রহণ করার জন্য দঃ কোরিয়ার বাংলাদেশি সকল প্রবাসীদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
পরিশেষে, এই প্রোগ্রামের কথা সবার মনে পড়বে এবং উদ্যোক্তা বান্ধব সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রত্যেকের সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর আগামী কামনা করে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন ড. রাফিউদ্দিন আহমেদ।