শেখ এহছানুল হক খোকন, কুয়েত সিটি, কুয়েত:
মধ্যপ্রাচ্য কুয়েতে বাংলাদেশিরা সেই ৪৫বছর পূর্বেই দুই একজন করে আসতে আসতে এখন তা দাড়িয়েছে তিন লাখের অধিক।আর সাত থেকে দশ হাজার রয়েছে পরিবার যাদের রয়েছে ছেলে মেয়ে ।
দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন অতিবাহিত করতে করতে ছেলে মেয়েদের জীবন প্রবাহটা এখানেই যোগ হয় সে অনুযায়ী তাদের উন্নত জীবন গড়তে লেখাপড়া সহ সব কিছু নিয়ে অভিবাবকদের চলে প্রচেষ্টা।
এখানে বাংলাদেশিদের জন্য স্কুল থেকে শুরু করে বিনোদন বা যা কিছুই বলিনা কেন সব ভীনদেশী কমিউনিটির প্রতিষ্ঠানকে বেছে নিতে হয় ।সেখেত্রে বাচ্চাদের লেখাপড়া শিখানোর জন্য ইংলিশ মিডিয়ামকে বেছে নিতে হয় অভিবাবকদের পাশাপাশি উপায় না পেয়ে ইন্ডিয়ান,পাকিস্তান, ফিলিপিনি বা অন্য কোনো দেশের স্কুল। সেখেত্রে ছেলে মেয়েরা ভীন দেশী কালচার নিয়ে পথ চলে, ভুলে যাচ্ছে নিজেদের বাঙালি সংস্কৃতি, বাংলা ভাষা। তারা জানতে পারে না বাংলাদেশের ইতিহাসকে ।
সে জন্য জরুরি একটি বাংলাদেশি স্কুল, যেখান থেকে বাচ্চারা শিখতে পারবে বাংলাদেশের জাতীয় প্রেক্ষাপটের বিভিন্ন বিষয় । বাচ্চাদের কাছে প্রশ্ন ছিল? জাতীয় ফল, ফুল, ইতিহাস নিয়ে কিন্তু তাদের বেশিরভাগই জানেনা এর নাম যা সত্যি অনেক লজ্জার ।
এছাড়া এ বিষয়ে কথা হয় অভিবাবক, ছাত্রছাত্রী, কমিউনিটির ব্যক্তিবর্গ ও দূতাবাস সহ অনেকের সাথে। সবাই স্কুলের প্রয়োজন আছে বলে স্বীকার করেন । ৪০ বছরের মধ্যে গত ২০১৪-১৫ সালে কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাবেক রাস্ট্রদূত আহসাব উদ্দিন ও কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা মিলে মর্নিং গ্লোরি নামে একটি বাংলাদেশি কমিউনিটি স্কুল শুরু করেছিল কিন্ত তা মাঝপথে এসে থেমে যায়। এর কারণগুলো ছিল বিভিন্নমুখী। পরবর্তীতে তা অবশ্য বঙ্গবন্ধু স্কুল নামে নামে কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শহিদ ইসলাম পাপুল থেকে ঘোষনা আসে পাশাপাশি তিনি চেষ্টা করছে কি করে পরিপূর্ণতা আনতে পারে সে স্কুলের ।
এদিকে কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাস্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম শুনালেন আশার বানী, তিনি জানান আগামী বছর সরকারী বা বেসরকারি ভাবে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে একটি কমিউনিটি স্কুল হওয়ার সম্ভাবনার কথা। এখন দেখার বিষয় পূর্বের তৈরি নাম মর্নিং গ্লোরি স্কুল, না অন্য কোনো নামে নতুন কোনো স্কুল হবে সেদিকেই অপেক্ষায় বাংলাদেশি প্রবাসীরা।
অন্যদিকে যারা স্বল্প আয়ের পরিবার তাদের অনেকেই হিমসিম খাচ্ছেন বাচ্চাদের এসব স্কুলে লেখাপড়া করাতে। সেদিক থেকে যারা বড় বড় ব্যবসায়ী বা ভালো আয় করেন তাদের বাচ্চারা কিছু নামীদামী স্কুলে অথবা ইন্ডিয়ান বা পাকিস্তানি স্কুলে পড়াতে পারছেন । লেখাপড়া শিখে মানুষ হবে বড় হবে সেটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, আবার নিজেদের সংস্কৃতি শিখতে বা জানতে বাংলাদেশি স্কুল থাকা মানে বাংলা ভাষা ও মাতৃভূমিকে লালন করা। তা না হলে দেশীয় ভাষা থেকে যেমনি দূরে রয়ে যায় তেমনি দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য জানার বিষয়টা থেকেই যাচ্ছে অন্ধকারে । এ থেকে মুক্তি লাভ করতে পারে একটি বাংলাদেশি স্কুল, সেটা ইংলিশ মিডিয়াম বা ভার্সন যাই হউক তবুও বাংলাদেশি শিশুরা তাদের মাতৃভাষা বাংলা যেমনটি আয়ত্ব করতে পারবে, তেমনি নিজের মাতৃভূমিকে জানার চেতনা নিয়ে পথ চলতে পারবে বলে জানান প্রবাসীরা।
তারা আরো বলেন, যদি অন্য দেশের স্কুল তৈরী হতে কোনো বাধা না থাকে, তবে বাংলাদেশের জন্য বাধাটা কোথায় তা চিহ্নিত করে একটা স্কুল তৈরী করা জরুরি।
সে জন্য কুয়েত ও বাংলাদেশের যৌথ আলোচনা সহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতা এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সরকারী বা বেসরকারীভাবে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব বলে মত দেন বিশিষ্ট জনেরা।
কুয়েতে বসবাস করা পরিবারগুলোর সন্তানেরা বাংলাদেশি স্কুলে অন্যান্য শিক্ষার পাশাপাশি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে অগ্রসর হবে সেই প্রত্যাশা সকলের।