প্রবাস মেলা ডেস্ক: ইউরোপের দেশগুলোতে স্থায়ীভাবে বসবাস বা সেখানকার নাগরিকত্ব পাওয়া অনেকেরই স্বপ্ন। একসময় বিষয়টি কিছুটা সহজ থাকলেও, বর্তমানে তা বেশ কঠিন। এমনই এক দেশ ইতালি। তবে দেশটিতে কীভাবে নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে তা জানিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি নিজেই। অভিবাসন আইন ও নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে ইতালি। ক্ষমতা গ্রহণের পরই মূলত দেশটিতে এ সংক্রান্ত কঠিন নীতি গ্রহণ করে জর্জিয়া মেলোনির সরকার।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গত ৭৮ বছরে ৬৯ বার সরকার গঠন হয়েছে ইতালিতে। ২০২২ সালের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ইতালির ইতিহাসে সর্বপ্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ক্ষমতায় আসেন। দেশটিতে অবৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ রোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসলেও, এক্ষেত্রে তার সফলতা শূন্য।
উল্টো গেল বছরের তুলনায় চলতি বছর ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে দ্বিগুণ অবৈধ অভিবাসী প্রবেশ করেছে দেশটিতে। সমুদ্রপথে অবৈধ অভিবাসীদের ঢল ঠেকাতে না পেরে দেশটিতে বসবাসরত অভিবাসীদের জন্য একের পর এক কঠোর আদেশ জারি করে মেলোনি সরকার। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে হতাশ দেশটিতে বসবাসরত বিদেশিসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
জর্জিয়া মেলোনি বলেছেন, ইতালির নাগরিকত্ব উপহার দেয়া হবে না। এ জন্য পরিশ্রম করতে হবে, কাজ করতে হবে। ইতালির ভাষা ও সংস্কৃতিও লালন করতে হবে। সেই সঙ্গে ইতালির উন্নয়নে অবশ্যই অবদান রাখতে হবে। তা নাহলে কাউকে দেশটির নাগরিকত্ব দেয়া হবে না।
ক্ষমতা গ্রহণের এক বছরের মধ্যে প্রবাসীদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি কঠোর আইন জারি করে মেলোনি সরকার। দেশটিতে আশ্রয় প্রার্থীদের আপিল দাখিলে পাঁচ হাজার ইউরো বাধ্যতামূলক অগ্রীম ফি নির্ধারণ করে প্রশাসন। পাশাপাশি দেশটিতে আশ্রয় প্রার্থীদের পূর্ব ইউরোপের দেশ আলবেনিয়ায় ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়ার নীতি গ্রহণ করে ইতালি। দেশটির সরকারের এমন সিদ্ধান্ত যুগ যুগ ধরে সহজ ও প্রবাসীবান্ধব দেশ ইতালিকে কট্টর অভিবাসন-বিরোধী বলে পরিচিত করে তোলে।
মানবাধিকার, উদার আইনি প্রক্রিয়া এবং সহজে বৈধতা লাভের সুযোগের জন্য ইতালি ছিল ইউরোপে বাংলাদেশি অভিবাসন প্রত্যাশীদের প্রধান গন্তব্য। কিন্তু গত এক বছরে দেশটির সরকারের নেয়া পদক্ষেপে হতাশ তারা। তাই অবৈধ পথে দেশটিতে প্রবেশ না করতে অভিবাসন প্রত্যাশীদের সতর্ক করেছেন দেশটির বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা।