রানা সাত্তার, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: হঠাৎ ডাক্তার শফিকুল ইসলাম করোনায় পজেটিভ আসার পর তিনি আইসোলেশানে যান, তখন তার অবস্থা ভাল দেখা গেলেও ভিতরে ছিল এক চাপা ভয়। তার রক্তে ওই সময় ভালই অক্সিজেন ছিল। তারপরও কিছু একটা পিছু তাড়া করছিল। মাঝে মাঝে মনে করছিলেন, কোনোভাবেই এই রোগ থেকে আর বাঁচা সম্ভাবনা নেই। তবে করোনার প্রথম সারির যোদ্ধা হিসাবে ভেঙ্গে পরলে যে দেশের সাধারণ মানুষ মানসিকভাবে দূর্বল হয়ে পরবে তাই লড়াকু হয়ে লড়ার প্রস্ততি ইতিমধ্যে নিয়ে ফেলা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত প্রাণে বেঁচে গেছেন চট্টগ্রামের জনপ্রিয় মেধাবী তরুণ র্যাব-৭ এর আইসোলেশান এর ডাক্তার শফিকুল ইসলাম।
তার সেরে ওঠার বিষয়টি জানিয়েছেন ডা. নিজেই। তিনি বলেছেন, আমার বেঁচে ফেরার ঘটনাটি পুরাটাই মানুষ ও আমার ডাক্তার বন্ধুদের ভালবাসা। সেই সাথে র্যাব-৭ এর সকল সদস্যদের অফুরান ভালোবাসায় আমার মনোবল ছিল পাহাড়সম।
ডাক্তার শফিকুল ইসলাম জানান, পরিমাণমতো লেবু, লবঙ্গ, দারচিনি, এলাচ, আদা, রসুন, পানিতে ফুটিয়ে সহনীয় মাত্রায় ভাপ নিয়ে ওই পানি দিয়ে দিনে তিনবার গার্গল করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি করার জন্য কিছু এন্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন ঔষধ সেবনের মাধ্যমে তিনি করোনামুক্ত হয়েছেন।পূণরায় নমুনা পরীক্ষা করে কভিড-১৯ নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে তাঁর। বর্তমানে অফিসিয়ালি হাসপাতালের আইসোলেশন কেবিন ছেড়ে পূণরায় কর্মস্থলে যোগদান করেন। আইসোলেশানে থাকা অবস্থায় তিনি টেলিফোনে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট সম্রাট শাহজাহান এবং জাহিদ এর মাধ্যমে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যায়। একজন ডাক্তার হিসাবে তার দায়িত্বে রাখা রোগীদের কথা বরাবরই মাথায় ছিল।
তিনি জানান, করোনায় ভয় নয় মনোবল শক্ত রেখে আইসোলেশনে থেকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।গণসচেতনতা প্রয়োজন যেহেতু করোনার কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি তাই শুধু ডাক্তারের পক্ষে এর মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন হতে হবে, মাক্স পরিধান করতে হবে, কাশি শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে। যেসকল রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি আছে তাদের করোনা হলে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতামত অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।
রোগীদের উচিত ডাক্তারের নিকট সঠিকভাবে রোগের লক্ষণগুলো বলা অনেক সময় রোগীরা লক্ষণ না বলাতে আমরা করোনা রোগী না ভেবে ভালোভাবে পরীক্ষা করে দেখতে গিয়ে আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরো জানান, এই পর্যন্ত র্যাব-৭ এর ৯৩ জন সদস্য আক্রান্ত হয়েছিল তার অধিকাংশ সুস্থ। আর মাত্র ১৬জন আক্রান্ত রোগী আছেন। এরপর ইনশাআল্লাহ র্যাব-৭ কে আমরা করোনামুক্ত র্যাব-৭ বলতে পারবো বলে আশাবাদী।