প্রবাস মেলা ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলায় জড়িত ইসরাইলি উগ্রপন্থি বসতি স্থাপনকারীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এ ভিসা নিষেধাজ্ঞার কথা জানান। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘যারা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর সহিংস আক্রমণ করেছে, তাদের ওপর এটি কার্যকর হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘পশ্চিম তীরে শান্তি, নিরাপত্তা বা স্থিতিশীলতা নষ্ট করার’ সঙ্গে জড়িত যেকোনো ব্যক্তি বা যারা বেসামরিক নাগরিকদের ‘প্রয়োজনীয় পরিষেবা এবং মৌলিক প্রয়োজনগুলো’ গ্রহণ করতে অযৌক্তিকভাবে বাধা দেবে, তাদেরকে এ ভিসা নীতির আওতায় নিয়ে আসা হবে। এছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে পরিবারের সদস্যরাও এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসতে পারে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
ভিসা নীতি নিয়ে নিজের এক্সে (পূর্বের টুইটার) একটি পোস্ট করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এতে তিনি লিখেছেন, ‘আজ পশ্চিম তীরে শান্তি, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা নষ্ট করে এমন কাজে জড়িত বা অর্থপূর্ণভাবে অবদান রাখা ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের লক্ষ্য করে একটি নতুন ভিসা বিধিনিষেধ নীতি ঘোষণা করছি।’ তিনি বলেন, অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করার জন্য যথেষ্ট কাজ করছে না ইসরাইল। যার ফলে যুদ্ধ বেড়েছে বলে দাবি করেছে অধিকার গোষ্ঠীগুলো। সম্প্রতি বাইডেন প্রশাসন পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর সহিংসতাকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে – এ নিয়ে ইসরাইলকে সতর্ক করেছিল। অবশেষে ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নিল ওয়াশিংটন।
গত ৭ অক্টোবর থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা বেড়েছে। ওই দিন থেকে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। দীর্ঘ দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে হামলা চালানোর পর মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এরপর দুই দফায় মোট তিন দিন বাড়ানো হয় যুদ্ধবিরতি। এর মধ্যে চুক্তি মেনে উভয় পক্ষে মোট সাতবার বন্দি বিনিময় হয়েছে। ১ ডিসেম্বর এ চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আবারও গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করেছে ইসরাইলি সেনারা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি বিমান ও স্থল অভিযানে কমপক্ষে ১৬ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী বা ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু-কিশোর। এছাড়াও আহত হয়েছেন ৪০ হাজারেরও বেশি।