প্রবাস মেলা ডেস্ক: প্রায় এক দশক নির্বাসনে থাকার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরেছেন সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান সহস্রাধিক সহকর্মী, ভক্ত, অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ী। বিমানবন্দরে নেমে সিজদা দিয়ে শুকরিয়া আদায় করেন তিনি। তার আগমন উপলক্ষে শুক্রবার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে তাকে সংবর্ধনা দেন সাংবাদিক সমাজের নেতৃবৃন্দ। উক্ত অনুষ্ঠানে অন্যান্য সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দেশে ফেরার বিষয়ে আনসারী বলেন, দেশে ফিরতে পেরে রোমাঞ্চিত বোধ করছি। ছাত্র-জনতার সর্বোচ্চ আত্মত্যাগে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে; গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা আজ প্রশস্ত হয়েছে। একজন নোবেলজয়ী অধ্যাপক দেশের ক্রান্তিকালীন অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছেন, জাতি হিসেবে এটা আমাদের গর্বের।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্বাচন জালিয়াতি এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা নিয়ে জাতিসংঘ, পেন্টাগন, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও হোয়াইট হাইসের প্রেস কনফারেন্সে প্রতিনিয়ত প্রশ্ন করতেন সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের শেষ কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতি ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরেছেন তিনি। তবে তার এ পর্যায়ে যাওয়াটা মোটেও সহজ ছিল না। সাহসী সাংবাদিকতা করতে গিয়ে বিগত আওয়ামী সরকারের রোষানলে পড়ে দেশ ছাড়তে হয়েছিল তাকে।
মুশফিকুল ফজল আনসারী যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘জাস্ট নিউজ বিডি ডটকম’র সম্পাদনার পাশাপাশি স্থায়ী সাংবাদিক প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসংঘের সদরদপ্তর ও হোয়াইট হাউজে দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ তুলে ধরে নানাবিধ প্রশ্ন করতেন।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সহকারী প্রেস সচিব ছিলেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। এ ছাড়া দৈনিক ইত্তেফাকের কূটনীতিক প্রতিবেদক ছিলেন তিনি। বার্তা সংস্থা ইউএনবিসহ আরও কয়েকটি মিডিয়ায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন তিনি। বিশ্বব্যাংকের কনসালট্যান্টও ছিলেন। ব্রিটেনের দ্য টাইমস ও সানডে টাইমস পত্রিকায় ওয়ার্কএক্সিপিরিয়েন্স রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন।
একসময় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভিতে একটি অনুষ্ঠান অ্যাঙ্কর করতেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। এনটিভিতে জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান ‘হ্যালো এক্সেলেন্সি’ হোস্ট করেছেন কয়েক বছর। এতে রাষ্ট্রদূত এবং বিদেশী বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অতিথি হিসেবে থাকতেন। তিনি মানবাধিকার সংস্থা ‘রাইট টু ফ্রিডম’র নির্বাহী পরিচালক। ঢাকায় নিযুক্ত প্রাক্তন মার্কিন অ্যাম্বাসেডর উইলিয়াম বি মাইলাম সম্পাদিত বৈদেশিক নীতি ম্যাগাজিন সাউথ এশিয়া পারসপেক্টিভসেরও নির্বাহী সম্পাদক তিনি।