এক. বাংলাদেশের জিডিপিতে প্রবাসীদের হিস্যা এখন প্রায় ৮ শতাংশ। সরকারি হিসাবে এ অর্থ মোট জাতীয় আয়ের প্রায় ১১ শতাংশ, আর বেসরকারি তথ্যানুযায়ী ১৪ শতাংশ। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে প্রবাসীদের আয় মুখ্য ভূমিকা রাখছে। অথচ বিদেশ যেতে উচ্চব্যয়ের কারণে তাদেরকে পরতে পরতে নানান ঝুঁকি মোকাবেলা করতে হয়।
দুই. বিদেশগামী কর্মীদের ঝুঁকি হ্রাসে বাংলাদেশ সরকার অভিবাসন ব্যয়ের হার বেঁধে দিলেও এজেন্সীগুলো তা মানছে না। কর্মীদের থেকে দেশভেদে এক থেকে দেড় লাখ টাকা নেওয়ার সীমা থাকলেও এজেন্সী ও দালালদের কারণে জনপ্রতি সাড়ে পাঁচ লাখ থেকে আট লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য পরীক্ষা ফি বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ বহির্গমন ছাড়পত্র, বিমান ভাড়া দিগুণ হওয়ায় দেশের অর্থনীতির প্রাণ ভোমরাখ্যাত এই সেক্টরটি গভীর হুমকির সম্মুখীন হবে বলে আমরা আশংকা করছি।
তিন. বিদেশগামী কর্মীদের থেকে বেশি অর্থ নেওয়া ঠেকাতে সার্ভিস চার্জসহ সব অর্থ ব্যাংকের (চেক, ড্রাফট, পে-অর্ডার) এর মাধ্যমে লেনদেন করার কথা থাকলেও হাতে হাতে টাকা নিয়ে থাকে দালালচক্র, দেওয়া হয় না রসিদ। জমিজমা বিক্রি ও ঋণ করে বিদেশে গিয়ে প্রবাসীদের অনেকে যখন ব্যয় তুলতে পারছে না, মধ্যস্বত্বভোগীরা ঠিকই ফায়দা লুটে নিচ্ছে। তাই সৌদিআরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সমস্যা যেহেতু বাড়ছে, এ নিয়ে নীতিনির্ধারকদের সক্রিয়ভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। বায়রা’র সকল সদস্য সহ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে সরকার নির্ধারিত নীতিমালা মানতে বাধ্য করতে হবে। অনেক বাংলাদেশি অবৈধ ভিসা বাণিজ্য করছে, এটা বন্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। আর এগুলো নিশ্চিত করা গেলে অভিবাসন ব্যয়ও যেমন কমে আসবে, প্রবাসীরাও স্বস্তি পাবে, দেশে রেমিটেন্স প্রবাহেও গতি আসবে।
দেশে বিদেশে যে যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।