সোয়েব সাঈদ, রামু, কক্সবাজার থেকে: কক্সবাজারের ঈদগাঁও থানাধীন জালালাবাদ ইউনিয়নের মিজ্জিপাড়া এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রাক্তন প্রবীন শিক্ষককে দফায় দফায় মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলার শিকার শফিক আহমেদ ঈদগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক। দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে তিনি এ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে আসছেন। হামলাকারিদের প্রাণনাশের হুমকীতে বর্তমানে ওই শিক্ষকের পরিবার-পরিজন চরম আতংকে রয়েছে।
হামলার শিকার মাস্টার শফিক আহমেদ জানিয়েছেন- পৈত্রিক জমিতে তাঁর সৃজিত বাঁশ বাগান থেকে গত ৬ এপ্রিল দুপুরে বাঁশ কাটা শুরু করে স্থানীয় ছব্বির আহমদ, ছব্বির আহমদের ছেলে ইয়াছির আরফাত, স্ত্রী রোকেয়া বেগম, পুত্রবধু সুমি আকতার ও মর্জিনা আকতার লুৎফা।
এসময় খবর পেয়ে বাঁশ কাটার কারণ জানতে চাইলে ছব্বির আহমদ ও তার সহযোগিরা শিক্ষক শফিক আহমেদ ও শফিক আহমেদ এর ছেলে আশরাফ আজিজকে লোহার খুন্তি, ছুরি ও লাটি-সোটা দিয়ে মারধর করে। এতে তিনি (শফিক) শরীরের কয়েকটি স্থানে রক্তাক্ত আঘাত হয়।
মাস্টার শফিক আহমেদ আরো জানান-তাঁর পৈত্রিক এ জমি দীর্ঘদিন জবর-দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে ছব্বির আহমদ ও তার সহযোগিরা। জমি জবর দখলে বাঁধা দেয়া বিগত কয়েকমাস পূর্বে এবং ২০২০ সালে কয়েকদফা হামলা চালায়। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ছব্বির আহমদের স্বজনরা তাঁর (শফিক আহমদ) পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের চেষ্টা এবং মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির হুমকী দিয়ে আসছে। এসব হামলা ও হুমকী-ধমকিতে জড়িতরা হলেন-মৃত ওবাইদুল্লাহর ছেলে ছব্বির আহমদ, ছব্বির আহমদের স্ত্রী রোকেয়া বেগম, ছেলে ইয়াছির আরাফাত ও ফয়সাল, পুত্রবধু সুমি আকতার ও মর্জিনা আকতার লুৎফা প্রমূখ। প্রতিনিয়ত এরা তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের হুমকী-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে।
হামলার শিকার মাস্টার শফিকের ছেলে আশরাফ আজিজ জানিয়েছেন-৭০ বছরের স্বত্ত¡ঃদখলীয় জমিতে তার বাবা বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। চারমাস পূর্বে ছব্বির আহমদের ছেলে ইয়াছির আরফাত সন্ত্রাসী কায়দায় সীমানা দেয়াল ও রান্নাঘর ভাংচুর করে। এরই প্রেক্ষিতে জালালাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল রাশেদ উভয় পক্ষকে নিয়ে জমি পরিমাপ করে স্ব-স্ব দখল বুঝিয়ে দেন। কিন্তু পরবর্তীতের চেয়ারম্যানের নিষ্পত্তি না মেনে ছব্বির আহমদ ও তার পরিবারের সদস্যরা আবারো হামলা-ভাংচুর, হুমকী-ধমকি, অশ্লীল কথাবার্তা অব্যাহত রেখেছে। এদের অব্যাহত হুমকী-ধমকিতে মাস্টার শফিকের পরিবার-পরিজন এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ভুক্তভোগী পরিবারটি নিজেদের স্বত্তঃদখলীয় জমি রক্ষা ও নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি সহ সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে কয়েকদিন পূর্বে মাস্টার শফিকসহ পরিবারের সদস্যদের উপর রক্তক্ষয়ী হামলার ঘটনা একাধিক ছবি ও ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। প্রবীন শিক্ষক শফিক আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এ ঘটনায় দোষিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন ঈদগাও এর সর্বস্তুরের জনতা।