আখি সীমা কাওসার, রোম, ইতালি প্রতিনিধি: সৈয়দা রুদাবা জামান। সৈয়দা শামিমা জামান এবং সৈয়দ আখতারুজ্জামান ইকবালের একমাত্র কন্যা সন্তান, পাঁচ বছর বয়সে মায়ের হাত ধরে ইতালিতে আসেন। রায়ার মা ইতালির রোমে কমুনিতে (সিটি কর্পোরেশন) চাকরি করেন। তার বাবাও ইতালির রোমে চাকরি করেন।
রায়া ইতালিয়ান স্কুলে ভর্তি হয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে পড়াশুনায় ভালো ফলাফল করলে নিজের ইচ্ছায় এবং মা বাবা দুজনের উৎসাহে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু করে । এক কথায় রায়ার নিজ ইচ্ছাই ছিল প্রবল, যার জন্য তার এই ফলাফল । হাসিখুশি সুন্দরমনা রায়া ইতালিয়ান সংস্কৃতির পাশাপাশি বাংলাদেশি ভাষা এবং সংস্কৃতি কোন কিছুই সে ভুলে নি। এটার কৃতিত্ব সম্পূর্ণ তার মায়ের।
ইতালির রোম সহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের মুখ উজ্জ্বল করেছেন রায়া । গত ২৪ জুলাই ২০১৯ কেমিস্ট্রি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল শিক্ষার্থীদেরকে সম্মাননা ও শপথ অনুষ্ঠানে প্রায় শতাধিক ছাত্রছাত্রীদের শপথ বাক্য ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন সাথে রায়াকেও লা সাপিয়েন্সা ইউনিভার্সিটির (La Sapienza University) প্রধানরা। সে অনুষ্ঠানে একমাত্র প্রবাসী বাংলাদেশিদের হয়ে শপথ ও সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন সৈয়দা রুদাবা জামান রায়া।
রায়ার সাথে কথা বলে জানা যায়, সে এর উপর উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে পড়াশুনা চালিয়ে যাবেন। শামীমা জামান তার মেয়ের এই অসাধারণ ফলাফলে খুবই আনন্দিত এবং গর্বিত। তিনি বলেন, আমার মেয়ের জন্ম এই দেশে নয়। কিন্তু সে এই দেশে বড় হয়েও বিদেশীদের সাথে পাল্লা দিয়ে ভালো ফলাফল করেছে। তার এই ফলাফলের কারণে আমাদের বাংলাদেশি প্রবাসীদের বিদেশীদের কাছে মুখ উজ্জ্বল করেছে। তিনি তার মেয়ের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন ।
তাদের একমাত্র মেয়ে রায়া যখন পাঁচ বছর তখন সে মা বাবার সাথে ইতালিতে আসে । ঢাকাতে সে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ালেখা করত ইতালিতে এসে ক্লাস ওয়ান থেকে (Prima Elimentare ) লেখাপড়া শুরু করেন ইতালিয়ান ভাষায় । সব সময় ভালো রেজাল্ট করে প্রতিটি ক্লাস শেষ করেছে । এখনও তাদের মেয়ে বরাবরের মতই ১১০এ ১১০+ পেয়ে ইতালির অন্যতম সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ইউনিভার্সিটি স্যাপিয়েন্সা থেকে কেমিস্ট্রি থেকে গ্র্যাজুয়েশন লাভ করেছেন ।
রায়ার এই মেধাবী রেজাল্টে তার মা-বাবাসহ রোম ইতালির বাংলাদেশিরা যেমন খুশি তেমন অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেছেন। তারা বলেন, রোমে রায়ার এই রেজাল্টে আমাদের ছেলেমেয়েরা উচ্চ শিক্ষার্থে অনুপ্রেরণা পাবে । রায়ার গ্র্যাজুয়েশন শিরোমনি প্রোগ্রামে রায়ার এই ফলাফলে ইতালিতে বেড়ে উঠা এই প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা ও অভিবাবকরা আরো উৎসাহিত হবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন ইতালি প্রবাসী কয়েকজন বাংলাদেশি।