আবুল কালাম আজাদ খোকন, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া প্রতিনিধি: ১৪ অক্টোবর সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় সিডনিস্থ বনলতা রেস্টুরেন্ট সেন্টারে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়া’র আয়োজনে ‘তৃণমূলের রাজনীতি ও বাংলাদেশের সমসাময়িক প্রসঙ্গ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিবচর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সাবেক মেয়র আলহাজ আব্দুল লতিফ মোল্লা। বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি ড. রতন কুন্ডু।
ছোট্ট জারার পবিত্র কোরান তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রধান অতিথিকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়া‘র পক্ষ থেকে শহীদ, জাহিদ, লাবু এবং ছাত্রলীগ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি আমিনুল ইসলাম রুবেল ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনা জানান।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি মো.সিরাফুল হকের সভাপত্বিতে ও সাধারণ সম্পাদক পি.এস.চুন্নু’র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আল জাকারিয়া মামুন দেওয়ান স্বপন, এ.এ.অরূপ, শাহীন রেজা, মোহাম্মদ আলী সিকদার, এম,এ,সালাম, নির্মল কোস্টা, ড.তারেক, গিয়াস উদ্দিন মোল্লা, শরিফুজ্জামান প্রমুখ।
বিশেষ অতিথি ড. রতন কুন্ডু তার বক্তব্যে বলেন, তৃণমূলের নেতা কর্মীরা দলের প্রাণ। দলের দুর্দিনে এরাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে দেশে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের যে অশুভ পায়তারা চলছে তিনি এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমেই জাতীয় নেতৃত্ব তৈরী হয়। ১৯৬৯ সালের গণঅভুত্থানে ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্র রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি সিরাজুল হক তার বক্তব্যে বলেন, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাই ত্যাগি ও পরীক্ষিত। তারা দলের ক্রান্তিলগ্নে নিষ্ঠার সাথে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। নিজের জীবন বাজি রেখে তারা মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহন করেছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট যখন বঙ্গবন্ধু এভেন্যুইতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বতর্মান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা হয় তখন এই পরীক্ষিত ও ত্যাগি নেতা-কর্মীরাই বর্ম তৈরী করেছিল তাদের নেত্রীর প্রাণ বাঁচাতে। বর্তমানে বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের যে অশুভ পায়তারা চলছে তিনি এর তীব্র সমালোচনা করেন।
তিনি আরো বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশেই ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হয়নি। ইংল্যান্ড এর দিকে তাকাই তবে দেখতে পাই অনেক প্রধানমন্ত্রী আসে অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে। ছাত্র রাজনীতির মধ্যদিয়েই আগামীতে জাতীয় নেতৃত্ব গড়ে ওঠে। তাই বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের কোনো প্রশ্নেই ওঠে না। প্রধান অতিথি আলহাজ আব্দুল লতিফ মোল্লা তৃণমূলের রাজনীতির ওপর তার অভিজ্ঞতার আলোকে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত। তিনি অত্যন্ত আক্ষেপের সাথে বলেন, অনেকে যাঁরা স্বাধীনতা বিরোধী তারা কেন্দ্রের কোনো কোনো নেতাকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে দলে প্রবেশ করে পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতা-কর্মীদের উপেক্ষা করছে। এই অনুপ্রবেশকারীদের কারণে একসময় দল থেকে পরীক্ষিত নেতা-কর্মীরা বিলীন হয়ে যাবে। তিনি ছাত্র রাজনীতি বন্ধের তীব্র প্রতিবাদ করেন। তিনি দেশে ও প্রবাসের সকলের প্রতি এই অনুপ্রবেশকারীদের ব্যাপারে সজাগ থাকার আহবান জানিয়ে তার বক্তব্য শেষ করেন। সবশেষে সাধারণ সম্পাদক পি.এস.চুন্নু উপস্থিত সকলকে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।