শেখ এহছানুল হক খোকন, কুয়েত সিটি, কুয়েত প্রতিনিধি: বাংলাদেশ তথা বাঙালি শিল্প সংস্কৃতি সাহিত্য আর ভালোবাসায় ঘেরা একটি ভূ-খন্ড যেখানে মানুষের মাঝে মিশে আছে আউল বাউল একতারা দোতারা জারি সাড়ি মিলিয়ে সংস্কৃতির ভূবন তাকে জড়িয়ে চলার আনন্দে আনন্দিত হয় বাঙালিরা। দেশে যেমন তার বিস্তর চর্চা হয় তেমনি প্রবাসেও তার কমতি নেই। প্রবাসে বাংলাদেশ কমিউনিটিতে এ কাজে প্রচুর সাংস্কৃতিক কর্মী রয়েছে বিশেষ দিনগুলোতে নিজেকে ও দেশকে পরিচিত করাতে অনেক গুণি মানুষ রয়েছে তেমনি একজন সাংস্কৃতিক কর্মী’।
জানা যায়, বগুড়ার সন্তান কুয়েত প্রবাসী চাঁদ চৌধুরী প্রায় দুই দশক পূর্বে ভাগ্যকে সাথে নিয়ে কুয়েত এসেছিলেন একটি কোম্পানিতে। স্বল্প আয়ের মানুষ হলেও মনের দিক দিয়ে ছিলেন আদর্শবান। তাইতো যেখানেই অনুষ্ঠান সেখানেই চাঁদ মুখের অধিকারী চাঁদ চৌধুরী। সামাজিকভাবে যারা সভা সমিতি শিল্প সাহিত্য অথবা রাজনীতির সাথে জড়িত তাদের এমন কেউ নেই যারা চাঁদ চৌধুরীকে চিনেন না। কিন্তু একটা হতবাগ করা বিষয় সবার মাঝে দিয়ে চলে গেলেন তিনি না ফেরার দেশে “ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নাইলাহি রাজেউন” ।
তিনি সাফা ন্যাশনাল নামে কুয়েতের একটি কোম্পানিতে কাজ করতেন বলে ৩ নাম্বার মাহবুল্লার তার কোম্পানির বেরাক থেকে জানা যায়। এদিকে গত মাসের ১৭ তারিখ চাঁদ চৌধুরী অসুস্থ হয়েছিলেন বলে কেউ কেউ বলেন তখন কোনো একজন হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ফোন করে এ্যাম্বুলেন্স ডাকলে তাকে এসে হাসপাতালে নিয়ে যায় । এরপর আর তার খবর কেউ বলতে পারেনি বা জানাতে পারেনি, সবার ধারনা ছিল সে হাসপাতালে। এমন পরিস্থিতি হবে তা কে জানতো!
এমনি বেশ কিছুদিননিখোঁজ চাঁদ চৌধুরী কুয়েতের আদান হাসপাতালের মর্গেকে জানতো দীর্ঘ দিন ধরে পরে আছে তার লাশ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দূতাবাসকে ঠিকানাবিহীন লাশের খবরটি অবহিত করতে পারেনি।
“এর নাম প্রবাস ও প্রবাসী”! ২৫ নভেম্বর হঠাৎ এক ফোন আসে চাঁদ নেই। বাংলাদেশ দূতাবাস হতেও খবরটি নিশ্চিত হওয়ার পর বাংলাদেশ কমিউনিটিতে শুরু হয়ে যায় চাদকে খোজাখুঁজির হিরিক। তখন থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের সহকর্মী, কমিউনিটি, দূতাবাস আর গনমাধ্যমের কর্মী কেউ বাকী রইলো না। প্রমান হলো চাঁদ যে সত্যিই সকলের মাঝে ভালোবাসার তারই নিদর্শন হয়ে গেলো।
কিন্তু একটি কথা থেকেই যায় কেনো আমরা মৃত্যুর পূর্বে একজন প্রিয় মানুষ হয়ে একজন প্রিয় মানুষকে খুঁজিনা যদি তাই হতো তাহলে এতোদিন হয়তো এই মানুষটাকে হিমাগারে থাকতে হতোনা বলে কান্নাজড়া আবেগে বলছে কুয়েত প্রবাসী বন্ধু স্বজনরা। এখন সব কাজ সম্পন্ন হয়ে তার লাশটি স্বদেশের স্বজনদের কাছে দ্রুত যাবে সেটাই প্রত্যাশা। অপ্রত্যাশিত কোনো ঘটনা বা দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে কিন্তু চাঁদ যেনো কলংকিত না হয় কারো কারো মাঝে বেচে থাকবে চাঁদ চৌধুরী স্মৃতির আয়নায়।