আবু মুসা চৌধুরী:
এক একটি শব্দের ওজন অনেক টন। শব্দদের
যাবতীয় ভর-জ্যোৎস্না-লাবণ্য নিয়ে
আমি দিশাহারা।
লাল শব্দ কালো শব্দ নীল শব্দ শাদা শব্দ
হলুদ কচুয়া আর গেরুয়া শব্দ;
কোনো শব্দ মসৃণ, মোলায়েম, মমতামাখানো।
যে শব্দ হিংস্র ও হিংসাত্মক, তার সান্নিধ্য ও সংস্কার থেকে
সরে সরে যেতে ইচ্ছে হয়। আমারে ট্র্যাক করে
পিছু নেয় সেই নাছোড় শব্দসন্ত্রাসী।
শব্দের ঠিকানা জানা আছে। তাই ওদের
উৎপাতে তেমন ভাবিত নেই
আসলে শব্দ প্রজাতির ধাত্টাই এমন।
দু’একটা মিহি শব্দ, কতেক স্থূল শব্দ আর কিছু
সুহৃদ শব্দ আমাদের প্রতিবেশী।
কিছু শব্দ সৎ ও সাহসী। নয় শত্রুভাবাপন্ন। ওদের
অভিধানে যে পরশ্রীকাতরতা নেই, ওরা সামাজিক, সহমর্মী, মিশুকে।
আমার কেন ভালো লাগে এতো শব্দদের।
ওদের ভালোবাসি। ওদের সাহচর্যেই শোয়া-বসা
তাবৎ তৎপরতা, শখ-আহ্লাদ, বিলাস-ব্যসন আর
স্বাভাবিক সম্পর্ক আমাদের। আবার কখনো
কোনো শব্দের আচানক আচরণে
বড়ো ব্যথা পাই মনে।
যদিও শব্দ নিয়ে আমার কোনো শুচিবাই নেই। কোনো
শব্দ শুচিস্মিতা, কোনোটি নারকীয়;
পক্ষান্তরে শব্দচারিত্র্য বহুধামাত্রিক।
যে শব্দটি রোদনরূপসী, তার পাশেই
শুয়ে আছে উচ্ছ্বসিত’ হরষিত কেউ, ওরা
ভারী বৈচিত্র-পিয়াসী।
কোনো শব্দের নাম- ভুলভালাইয়া।
শব্দের রহস্যময়তায়, গোলক ধাঁধায় আমার
ইহকাল গেলো, জন্মান্তরেও যেন শব্দদের কাছে
ফিরে ফিরে আসি…
শব্দের ছেনালিপনায় কর্ণকুহর ঢেকে রাখি; আবার
কখনো কাম-কেলি-কল্লোলে শব্দগুলো ৩৬ কলা।
শব্দ ভালোবাসি। শব্দের সাথেই আমার বৈবাহিকী।