প্রবাস মেলা ডেস্ক: মধ্য আফ্রিকার গাবনে বুধবার সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ একদল অফিসার টেলিভিশনে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানেই তারা ঘোষণা দিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট আলি বংগকে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকারি সমস্ত দপ্তর দখল করা হয়েছে। সেনাবাহিনী দেশের ক্ষমতা দখল করে নিয়েছে।
গাবনের রাজধানী লিব্রেভিলে এদিন বেশ কয়েকবার গুলির আওয়াজ শোনা যায়। বস্তুত, এদিনই দেশের নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে প্রেসিডেন্ট আলি বংগ ৬৪ দশমিক দুই সাত শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরেই সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে নেয়। সেনাবাহিনী জানায়, প্রেসিডেন্ট সুরক্ষিত আছেন। তাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। তার সঙ্গে পরিবারের অন্য সদস্য এবং চিকিৎসকেরা আছেন। বংগের প্রধান পরামর্শদাতা তার ছেলে নউরেদ্দিন বংগ ভ্যালেন্টিন। তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী জানায়, সমস্ত সরকারি দপ্তর অধিগ্রহণ করেছে সেনারা। বিদ্রোহী সেনাদের মধ্যে পুলিশ, সেনা, প্রেসিডেন্টের গার্ড, আধাসামরিক বাহিনীর অফিসার সবাই আছেন। উচ্চপদস্থ অফিসার থেকে সাধারণ জওয়ান, সকলেই এই বিদ্রোহে যোগ দিয়েছে।
এদিকে বংগ তার বাসভবন থেকে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, কীভাবে কী ঘটে গেল, তিনি বুঝে উঠতেই পারছেন না। তিনি চান এর বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠুক। নিজের কর্মী সমর্থকদের আওয়াজ তোলার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এর ফলে সেনাদের সঙ্গে বংগ সমর্থকদের সংঘর্ষ শুরু হতে পারে।
তবে নির্বাচনের সময় থেকেই গোটা দেশজুড়ে যথেষ্ট উত্তেজনা ছিল। যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হয়েছে, তা গণতান্ত্রিক নয় বলে একাধিক সংবাদমাধ্যমে খবর হয়েছে। কোনও কোনও সংবাদমাধ্যম একে অযৌক্তিক এবং অবিশ্বাস্য বলে অভিহিত করেছেন। সম্পূর্ণ জালিয়াতি করে বংগ নির্বাচন জিতেছেন বলে বিরোধীপক্ষ অভিযোগ তুলেছে।
জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, গুতেরেস এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন। যেভাবে সেনাক্ষমতা দখল করেছে, জাতিসংঘ তার বিরোধিতা করেছে।
জার্মানির তরফেও এই ঘটনার নিন্দা করা হয়েছে। তবে একইসঙ্গে জার্মানি জানিয়েছে, যে কায়দায় সেখানে নির্বাচন হয়েছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। সামগ্রিক পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানায় জার্মানি।
ফ্রান্স দীর্ঘদিন ধরে দেশটিকে শাসন করেছে। এখনো ফ্রান্সের গুরুত্বপূর্ণ খনি সংস্থাগুলি গাবনে কাজ করে। সাময়িক সময়ের জন্য তাদের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফ্রান্স সমস্ত নাগরিককে দেশে ফেরার কথা বলেছে। পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছে ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।