হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: অর্থনীতিবীদ, সুদক্ষ প্রশাসক, নিবেদিত শিক্ষাবিদ, জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক, মুক্তিযোদ্ধা, সর্বোপুরি দেশপ্রেমিক এবং ২০১৪ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত ড. খসরুজ্জামান চৌধুরীর আজ ৪ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী।
খসরুজ্জামান চৌধুরী তদানীন্তন পাকিস্তানের সিভিল সার্ভিস ক্যাডারের সদস্য ড. খসরুজ্জামান চৌধুরী ১৯৭১ সালে কিশোরগঞ্জ মহকুমার মহকুমা প্রশাসক থাকাকালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন এবং দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে কিশোরগঞ্জে নেতৃত্ব প্রদান করেন। পরবর্তীতে কোলকাতায় মুজিবনগর সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপসচিব পদে কর্মরত ছিলেন। স্বাধীনতার পরে তিনি বাংলাদেশের বৃহত্তম জেলা ময়মনিসহ জেলার প্রথম জেলা প্রশাসক পদে নিযুক্ত হন। বাংলা দেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে উপ-সচিব থাকা কালে তিনি বাংলাদেশের UNESCOর প্রথম সচিব হিসেবে কর্মরত থাকেন।
পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্কুল অব গভর্ণমেন্ট, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাসটার্স এবং সিরাকিউজ বিস্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পি এইচ ডি ডিগ্রী লাভ করে যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা স্টেটের রাজধানী ব্যাটনরুজ শহরে সাদার্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে অধ্যাপনা করেন। সেই সময়ে দেশ থেকে অনেক ছাত্র-ছাত্রীকে আর্থীক ব্যাবস্থা করে নিজের এবং অন্যান্য বিভাগে ভর্তি করে সাবলম্বী করে দিতে সহায়তা করেছেন।
ড. খসরুজ্জামান চৌধুরীর অনেক সারগর্ভ লেখা বাংলা এবং ইংরেজী উভয় ভাষাতে দেশ-বিদেশের পত্র-পত্রিকা এবং জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি অর্থনীতিসহ ছোট গল্প, কবিতা, ছড়া, কৌতুক, প্রবন্ধের পুস্তক প্রকাশ করেন। তিনি তাহমিনা জামানের সংগে যৌথভাবে বই লিখেছেন। যৌথভাবে লিখেছেন ড. মিজানুর রহমান শেলীর সংগে “পাকিস্তান অ্যাফেয়ার্স” এবং “কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স” নামে দুটো বই মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে।
উল্লেখ্য, ড. খসরুজ্জামান চৌধুরীর লেখা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালের ডাইরী “The Turbulent 1971: My Diary” বাংলাদেশের ঐতিহাসিক দলিল ২০১৯ এ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে।
২০১৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ড. খসরুজ্জামান চৌধুরী লুইজিয়ানা স্টেটের ব্যাটনরুজ শহরে নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। তিনি তার স্ত্রী অধ্যাপিকা তাহমিনা জামান, পুত্র, কন্যা, পুত্রবধূ, জামাতা, নাতী-নাতনী, আত্মীয়স্বজন এবং বহু শুভাকাংখী রেখে গেছেন। তার পরিবারের সদস্যগণ, শুভাকাংখী এবং পাঠকদের কাছে মরহুমের রুহের জন্যে দোয়া কামনা করেছেন।