প্রবাস মেলা ডেস্ক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ ভেবেছিলাম ক্ষমতা চিরস্থায়ী। জনগণকে শুধুমাত্র কিছু দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখিয়েছে। পরবর্তীতে কী হতে পারে, সেটা তারা ভাবেনি, আওয়ামী সরকারের সমালোচনা করলেই তখন বলা হতো হাসিনার বিকল্প কে? অর্থাৎ হাসিনার বিকল্প নেই, তাই সমালোচনা করা যাবে না।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে চারটায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২২২নং কক্ষে আয়োজিত ‘ফ্যাসিবাদ নিয়ে বোঝাপড়া’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এই কথা বলেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত ত্রৈমাসিক ‘চিন্তক’ এই সেমিনারটির আয়োজন করে।
এসময় তিনি আরও বলেন, আমাদের টাকায় বিভিন্ন উন্নয়ন যা হয়েছে সে বিষয়ে আমাদের কোন প্রশ্ন করার সুযোগ ছিল না। কত টাকায় হওয়ার কথা কত টাকায় হলো সেটাও জানার বা প্রশ্ন করার অধিকার ছিল না আমাদের। তাদের কথা একটাই ছিল বঙ্গবন্ধুর কন্যার দ্বারা কোন ক্ষতি হবে না। আমরা যেকোনো আন্দোলনে যাই বলতাম তারা শুধু একই কথা বলতো।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ আরো বলেন, আমরা বিগত বছরগুলোতে যে নির্বাচন দেখেছি তা কোন নির্বাচন ছিল না। এটা ছিল একটা স্বৈরাচারী ব্যবস্থা। তাছাড়া আমরা যখন দুর্নীতি, গুম, খুন নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতাম, তখন তারাও স্বীকার করতো বিষয়গুলো, কিন্তু ব্যবস্থাটা এমন ছিল যে এর বিরুদ্ধে কারও কিছু বলার ছিল না। কারণ এসব কার্যক্রম একটি স্বৈরাচারী ব্যবস্থার মধ্যে আটকে ছিল।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষয়ে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষয়ে সতর্ক করতাম, তারা শুধু এটাই বলতো যে বঙ্গবন্ধুর কন্যার দ্বারা ক্ষতিকর কিছু হবে না।
অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে মাসিক সাম্যবাদের সম্পাদক ডা. জয়দ্বীপ ভট্টাচার্য বলেন, ফ্যাসিবাদ আসলে একটা ব্যবস্থা। এটা শুধু একটা দলের কাজ নয়। এখানে বিভিন্ন অনুষঙ্গের মাধ্যমে এই ধরণের একটি ব্যবস্থা গড়ে উঠে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের পেছনে সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল বড় বড় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট, ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ।
জয়দ্বীপ ভট্টাচার্য আরও বলেন, আমাদের কাঠামোটাই ফ্যাসিবাদের ওপর দাড়িয়ে আছে। বর্তমান সরকারও এর ভেতর থেকে বের হতে পারছে না। আওয়ামী লীগ যে এতো মানুষ হত্যা করেছে, তারপরও তাদের বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নাই। আমরা দেখেছি সরকার নিপীড়নের জন্য পুলিশকে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেছে। আমরা চাই সংবিধান এমনভাবে সংশোধন করা হউক যাতে করে ভবিষ্যতে চাইলেই কেউ আমাদের হাতে হাতকড়া পড়াতে না পারে। একটা গণআন্দোলনকে জোরপূর্বক যাতে দমন না করা হয়।